৫৮ মিনিটের খেলা চলছে , রিয়াল বেটিস ০-০ বার্সেলোনা। বারবার টেলিভিশনের পর্দায় আর্নেস্তো ভালভার্দের শঙ্কিত মুখ ভেসে উঠছে। একপাশে ভালভার্দের কপালে চিন্তার ভাঁজ। অন্যপাশে মেসি, সুয়ারেজদের গোলের রাস্তা খুঁজে না পাওয়া। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন , কোপা ডেল রেতে এসপানিওলের বিপক্ষে হারের ধাক্কাটা কি এখনো সামলে উঠতে পারেনি বার্সেলোনা? খেলা শেষে প্রশ্নটি মাটিতে গড়াগড়ি খেল। বার্সা যে শেষ পর্যন্ত বেটিসের বিপক্ষে ৫-০ গোলের উৎসব দিয়ে লা লিগার দ্বিতীয় পর্ব শুরু করেছে। কাতালানদের বড় জয়ে জোড়া গোল করেছেন প্রাণভোমরা লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজ। অন্য গোলটি করেছেন ইভান রাকিটিচ ।
নিজেদের মাঠে প্রথমার্ধে বেটিসের খেলোয়াড়েরা প্রাণপণ লড়াই করেছেন। নিজেদের রক্ষণ জমাট রেখে বার্সার মাঝমাঠের সঙ্গে ফরোয়ার্ড লাইনের সুতা কেটে দিয়েছিলেন। ইনজুরির জন্য পাওলিনহো না থাকায় প্রতিপক্ষের ‘টাইট মার্কিং’ করা ট্যাকেলের বিপক্ষে বার্সার সৃষ্টিশীল মধ্যমাঠও যেন কেমন ছিল নিষ্ক্রিয়। দ্বিতীয়ার্ধে দৃশ্যটা বদলে যায় ভোজবাজির মতো। স্পষ্ট করে বললে ৫৯ মিনিট থেকে শুরু হয় গোল উৎসব। ৮৯ মিনিটে শেষ হয়ে স্কোর লাইনের ডিজিট ৫-০।
৫৯ মিনিটে সুয়ারেজের রক্ষণ চেরা এক পাসে বেটিসের গোলমুখ আগলা করে দেন ইভান রাকিটিচ। সুয়ারেজের থ্রু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে শুধু গোলের খাতাই খুললেন না রাকিটিচ, ভেঙে দিলেন প্রতিপক্ষের বাঁধটাও। প্রথম গোলের সঙ্গে বদলি হিসেবে মাঠে ঢুকলেন পাওলিনহোও। মাঝমাঠে শুরু হলো ইটের জবাবে পাটকেল দেওয়া। আর মেসি ও সুয়ারেজ নিজেদের চেক বই খোলায় গোল হয়ে যায় মুড়ি–মুড়কির মতো ব্যাপার।
৬৪ মিনিটে প্রথমে খোলেন মেসি। সার্জিও বুসকেটসের বাড়ানো বল চকিতে ঘোড়ার মধ্যে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে ২-০ করলেন খুদে জাদুকর। এবার নিজের চেক বই খোলার পালা সুয়ারেজের। ৬৯ মিনিটে খুললেন দুর্দান্ত গোলে। ডান প্রান্ত থেকে রাকিটিচের ক্রসে দুর্দান্ত সাইড ভলিতে ৩-০ করেছেন উরুগুয়েন তারকা।
তিন গোল হজম করার পর লড়াই করার মতো বেটিসের আর কিছু জমা থাকে নাকি! বাকি যা ছিল, সবই মেসি ও সুয়ারেজের জন্য। ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ও দলীয় এক হালি পূরণ করলেন মেসি তাঁর ট্রেডমার্ক ড্রিবলিংয়ে ৮০ মিনিটে। নয় মিনিট পরে সুয়ারেজের দ্বিতীয় ও ম্যাচের শেষ গোলটিও মেসির দৃষ্টিনন্দন ড্রিবলিংয়ের ফসল। মেসি অ্যাটাকিং থার্ডের নিচ থেকে বল নিয়ে দৌড় শুরু করলে তাঁর পেছনে দৌড়াতে থাকেন তিনজন। শেষ পর্যন্ত তাঁকে থামানো গেলেও সেই বলেই আয়েশি প্লেসিংয়ে গোল করেছেন সুয়ারেজ, ৫-০। আজকের জোড়া গোলে মেসির গোল হলো ১৯টি। আর সুয়ারেজের ১৫টি।
শেষ ম্যাচে এসপানিওলের বিপক্ষে হারের ঝালটা বোধ হয় বেটিসের ওপর দিয়েই মেটালেন মেসি–সুয়ারেজরা। ২০ ম্যাচে ১৭ জয় ও তিন ড্রয়ে ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা।