সিরিয়া সংকটের কারন কি? কে কার পক্ষে? কার কি স্বার্থ? পরিণতি কি হবে?

0
সিরিয়া যুদ্ধ

বিশ্বে এখন সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকট ও মানবিক বিপর্যয় বিরাজ করছে সিরিয়ায়। প্রতিদিনই পত্রিকার পাতায়, টিভির পর্দায় কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখে পড়ে নারী, শিশুসহ অসংখ্য বেসামরিক নাগরিকের নিহত, আহত হওয়ার খবর। ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট আসাদের বিপক্ষে শুরু হওয়া আন্দোলন থেকে পরে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধ এখন নানা পক্ষের জড়িত হওয়ায় জটিল এক সমীকরনে দাঁড়িয়েছে। ৬ বছর ধরে চলা এ যুদ্ধে ৬ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং আহতের সংখ্যা ১০ লাখের বেশি। নিহতের এক তৃতীয়াংশই বেসমারিক নাগরিক। শরনার্থী বা ‘রিফিউজি’ এর সংখ্যা ৬০ লাখেরও বেশি।

সিরিয়া যুদ্ধ
প্রতিদিনই দেখতে হচ্ছে মানুষের অসহায়ত্বের দৃশ্য

এ সংকটের সমাধান কবে হবে সেটা জানা নেই কারো। কিভাবে সিরিয়া যুদ্ধের শুরু হল, এ যুদ্ধে কারা জড়িত, কোন দেশ কাদের পক্ষে, কি তাদের স্বার্থ? কি হতে পারে পরিণতি?

সংকটের সুচনাঃ

২০১১ সাল। গণতন্ত্রের দাবীতে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ বিক্ষোভে উত্তাল যা আরব বসন্ত নামে পরিচিত। এরই সুত্র ধরে ২০১১ এর মার্চে সিরিয়ার একনায়ক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পদত্যাগ ও দেশে একনায়কতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবীতে সিরিয়ার বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করে। রাজধানী দামেস্ক সহ বড় শহরগুলোয় বিরোধী দল ও সাধারণ জনতার বড় অংশ রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভকারীদের দমন করতে প্রেসিডেন্ট আসাদ সেনাবাহিনী নামিয়ে দেয়। সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে নিহত হতে থাকে বিক্ষোভকারীদের অনেকে। দিনে দিনে নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকলো। হত্যা, নির্যাতনের অভিযোগে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সিরিয়ার উপরে।

৩ মাসে হাজার ছাড়িয়ে গেল নিহতের সংখ্যা। তবুও রাস্তা ছাড়লো না বিক্ষোভকারীরা। সেনাবাহিনীর অনেকে বাহিনী ছেড়ে চলে আসে। আসাদ বিরোধী বিরোধীদল ও সুন্নি সমর্থকদের সাথে এক হয়ে তারা ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’ নামে নতুন সামরিক বাহিনী। আল নুসরা , আল কায়েদার মত জঙ্গী গোষ্ঠীও যোগ দেয় এই বিরোধী বাহিনীতে। বাড়তে থাকে যুদ্ধের ব্যাপ্তি। আসাদের বাহিনী ও বিদ্রোহী বাহিনীর মাঝে চলতে থাকে তুমুল লড়াই।

আসাদকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসে রাশিয়া ও ইরান। লেবাননের গেরিলা গোষ্ঠী হিজবুল্লাহও আসাদের পক্ষে লড়তে এগিয়ে আসে।

আর বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহায়তা দিতে থাকে আমেরিকা, ইসরাইল,  ইংল্যান্ড, ফ্রান্স , সৌদি আরব।

এদিকে যুদ্ধে ৩য় পক্ষ হিসেবে যোগ দেয় আইএস। ইরাকের বিশাল এলাকা দখল করার পর আইএস সিরিয়া দখল করতে অগ্রসর হয়। আইএস এর প্রবেশ পরিস্থিতি জটিল করে তোলে। আইএস চায় আসাদকে সরাতে, এদিকে আমেরিকাও চায় আসাদকে সরাতে কিন্তু আবার চায় আইএসকে নির্মূল করতে। যুদ্ধে আইএস এর জড়িত হওয়ার ফলেই আমেরিকা আইএস দমনের কথা বলে যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে।

সিরিয়া যুদ্ধ
সিরিয়া যেন এখন এক ধ্বংসস্তুপ

২০১২ এর নভেম্বরে আমেরিকা, ইসরাইল, সৌদি আরব ও ইউরোপের কয়েকটি দেশ  বিদ্রোহী নেতাদের নিয়ে ‘জাতীয় পরিষদ’ নামে কাউন্সিল গঠন করে এবং সিরিয়ার প্রশাসক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু আল কায়েদা ও আল নুসরা জঙ্গি গোষ্ঠির নেতাদের পরিষদে রাখা হয় না।

রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহারের অভিযোগ এনে ও আইএস দমনের কথা বলে কয়েকটি বিমান হামলা করে যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে আমেরিকা।

এদিকে আরেকটি পক্ষ হিসেবে ময়দানে নামে কুর্দিরা। এই যুদ্ধের ডামাডোলে কুর্দিরাও তৎপর হয়েছে তাদের জন্য স্বাধীন আবাসভূমির স্বপ্নে। আমেরিকা এগিয়ে এসেছে কুর্দিদের সহায়তায়। ফলে ন্যাটাভুক্ত দেশ হওয়া সত্ত্বেও কুর্দিদের বিপক্ষে সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে তুরস্ক। কারন কুর্দিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র হতে দিতে রাজি নয় তুরস্ক।

বিভিন্ন পক্ষের অংশগ্রহনে সিরিয়া পরিস্থিতি এখন জটিল আকার ধারন করেছে।

এবার দেখা যাক কোন দেশের কি স্বার্থ, কেনই বা তারা বিভিন্ন পক্ষকে সহায়তা দিচ্ছে?

সিরিয়া যুদ্ধে পক্ষ বিপক্ষ নির্ধারনে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও প্রকৃতিক সম্পদ সবকিছুই ভূমিকা রেখেছে।

সিরিয়া সংকট
বিভিন্ন পক্ষের বিভিন্ন স্বার্থ সিরিয়া সংকটকে করে তুলেছে জটিল

আমেরিকা, ইসরাইল, ইংল্যান্ডঃ

ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরাইলি আগ্রাসনের জবাবে বাশার আল আসাদের পিতা তৎকালীন সিরিয় প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল আসাদ ৩০ হাজার সিরিয় সৈন্যকে বেকা উপতাকায় মোতায়েন করেন। এসময় ইসরাইলের সাথে কয়েকবার সংঘর্ষও বাঁধে সিরিয়ার সঙ্গে ইসরাইলের বেশ কয়েকটি সংঘর্ষ বাঁধে।তাই ঐতিহাসিকভাবেই সিরিয়া ও ইসরাইলের মধ্যে শত্রুতা রয়েছে। হাফিজ আল আসাদের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসে বাশার আল আসাদ। পিতার মত সেও ইসরাইল বিরোধী নীতিতে অটল থাকেন। হিজবুল্লাহ ও হামাসকে সহায়তা করে আসাদ সরকার। আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে আমেরিকা ও ইসরাইল অন্তত ৩ বার সেনাবাহিনীতে ক্যু করার চেষ্টা করেছে। তবে কোনবারই চুড়ান্ত সফলতা পায়নি।  ফলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল এর জন্য মাত্র দুইটি দেশ হুমকি হয়ে আছে। ইরান ও সিরিয়া। ইরানকে নানা অবরোধ দিয়ে দাবিয়ে রাখায় চেষ্টা অব্যহত আছে। সিরিয়ায় আসাদ কে সরিয়ে নিজেদের পছন্দমত কাউকে বসাতে পারলে সিরিয়া নিজেদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। মূলত এ কারনেই স্বাভাবিকভাবেই ইসরাইল, আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলো আসাদ বিরোধী বিদ্রোহী বাহিনীকে সহায়তা করছে।

সৌদি আরবঃ

আমেরিকা ও ইসরাইলের মিত্র বলে পরিচিত সৌদি সরকার শিয়াপন্থী আসাদ সরকারকে সরাতে চায় ধর্মীয় মত বিরোধের কারনে ও দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বিরোধিতার কারনে। আবার ইরানের সাথে আসাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারনে স্বাভাবিক ভাবেই আসাদকে সরাতে চায় ইরানের শত্রু ও ওয়াহাবী পন্থী সৌদি আরব। তাই সৌদি আরব চায় আসাদ কে সরিয়ে তাদের মতাদর্শের ও অনুগত কাউকে ক্ষমতায় বসাতে। এ লক্ষ্যে সৌদি আরব বিলয়ন ডলার খরচ করছে বিদ্রোহীদের পক্ষে।

কাতারঃ

কাতার পারস্য উপসাগর থেকে সিরিয়ার মধ্য দিয়ে তুরস্ক ও ইউরোপে গ্যাস পাইপলাইন নিয়ে যেতে চায় । কিন্তু রাশিয়ার স্বার্থ চিন্তা করে আসাদ সিরিয়ার মধ্যে দিয়ে এই পাইপ লাইন নিয়ে যেতে অনুমতি দেয় নি। কারন এতে রাশিয়ার ওপর থেকে ইউরোপের প্রাকৃতিক গ্যাসনির্ভরতা কমে যাবে। ফলে কাতারও চায় আসাদের পতন। তাই কাতার আসাদের বিপক্ষে খরচ করেছে বিপুল অর্থ।

রাশিয়াঃ

মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার দুই বিশ্বস্ত বন্ধু হচ্ছে ইরান ও সিরিয়া। দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারনে পুতিন ও আসাদের সম্পর্কও এখন বেশ ঘনিষ্ঠ। আসাদের পতন হলে সিরিয়া চলে যাবে আমেরিকা , ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে। তাই রাশিয়া সক্রিয়ভাবেই যুদ্ধের ময়দানে ও জাতিসংঘে আসাদের পক্ষে আছে। ২০১২ সালে যুদ্ধের এক পর্যায়ে যখন কোনঠাসা হয়ে গিয়েছিল আসাদ বাহিনী তখন রাশিয়া এগিয়ে না আসলে হয়ত আসাদের চরম সংকটেই পড়তে হতো। মূলত রাশিয়ার সহায়তার কারনেই আসাদের বাহিনী এখন তুলনামুলক ভালো অবস্থানে আছে।

ইরানঃ

ইসরাইলের সবচেয়ে বড় শত্রু ইরান। আবার সৌদি আরবের সাথেও ইরানের ঐতিহাসিক শত্রুতা। আর আসাদ সরকার ইসরাইল ও সৌদি বিরোধী। এদিকে ইসরাইলকে চাপে রাখতে লেবাননের হিজবুল্লাহ গেরিলাকে দরকার ইরানের। আর সিরিয়া দিয়েই হিজবুল্লাহকে সহায়তা পাঠাতে হয় ইরানকে।  ফলে রাশিয়ার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বি ইরানও সমর্থন করে আসাদকে। ইরান আসাদের বাহিনীকে সামরিক সাহায্য ও গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহায়তা করে আসছে। সাহায্য করছে হিজবুল্লাহও

তুরস্কঃ

সিরিয়া যুদ্ধের শুরু থেকেই তুরস্ক আসাদবিরোধীদের সমর্থন করছে। এর একটি কারন হতে পারে সুন্নি ও শিয়া মতভেদ। আরেকটি কারন কাতার পারস্য উপসাগর থেকে সিরিয়া দিয়ে তুরস্কে প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন নিয়ে যেতে চায়, যা আসাদ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। আবার তুরস্ক আমেরিকা, ইংল্যান্ডের সাথে ন্যাটো জোটভুক্ত। ফলে শুরুর দিকে ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মির’ সঙ্গে তারা আসাদবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে।

তবে রাশিয়ার প্রভাবে ও এরদোগানের প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর আসাদ বিরোধী মনোভাব থেকে সরে এসেছে তুরস্ক। বর্তমানে সিরিয়া যুদ্ধে তুরস্কের মূল লক্ষ্য স্বাধীন রাষ্ট্রকামী কুর্দিদের দমন করা। তুরস্ক চায় না কুর্দিরা নতুন এলাকার নিয়ন্ত্রণ পাক। কারন তুরস্কে কুর্দিরা দীর্ঘদিন ধরে তুরস্ক সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য। সিরিয়ার যদি কুর্দিরা কোন স্বাধীন এলাকা পেয়ে যায় তাহলে সেটা তুরস্কের কুর্দিদের জন্য নিরাপদ স্থান হবে ও তুরস্কের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে সুবিধা হবে।

কি হবে পরিণতি? কে হবে জয়ী?

উপরে বিভিন্ন পক্ষ তাদের ভিন্ন ভিন্ন স্বার্থ থেকে এটা সহজের বুঝা যাচ্ছে সিরিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতি জটিল আকার ধারন করেছে। এখানে নিরুঙ্কুশ ভাবে বিজয়ী পাওয়া মনে হয় সম্ভব নয়। আমরা সকলেই চাই এই ধ্বংসাত্নক যুদ্ধ বন্ধ হোক। অসহায় নারী, শিশুদের করুন মৃত্যু যেন আর না হয়। কিন্তু শান্তিপুর্ন সমাধানে আসা সহজ হবে না। আসাদ বাহিনী ও বিদ্রোহী পক্ষ দুই পক্ষেরই প্রায় দুই লক্ষ করে সদস্য নিহত হয়েছে। ফলে কোনপক্ষই আরেকপক্ষকে ছাড় দেয়ার মানসিকতায় নেই। আত্নসমর্পন করলেও পরাজিত পক্ষকে মেনে নিতে হবে দীর্ঘ কারাবাস ও নির্যাতন। সেই সাথে যুক্ত হয়েছে নানা দেশের নানা স্বার্থ। এদিকে ১৮ মার্চ রাশিয়ার নির্বাচন। পুতিন চাইবে নির্বাচনের আগে সিরিয়ার নিজেদের ভাল অবস্থান নিশ্চিত করে জনগনকে আশ্বস্ত করতে।

বর্তমানে বিদ্রোহী বাহিনীর চেয়ে আসাদ বাহিনী যুদ্ধে তুলনামূলক ভাল অবস্থায় আছে। তারপরও আসাদ বাহিনীর বড় সমস্যা লোকবল। পুরো সিরিয়া নিয়ন্ত্রণ করার মত লোকবল আসাদ বাহিনীর এখন নেই। ফলে এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাশিয়া ও ইরানের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হতে পারে আসাদকে। বিদ্রোহী গ্রুপে নানা উপদল থাকায় তাদের মাঝে ঐক্যের অভাব আছে। প্রকৃতপক্ষে তাদের কোন একক নেতাও নেই। আবার আমেরিকাও বিদ্রোহীদের আগের মত প্রত্যক্ষ সহায়তা করছে না। ফলে কিছুটা কোনঠাসা অবস্থায় আছে বিদ্রোহীরা। আর আইএস এর অবস্থা একেবারেই নাজুক। যুদ্ধে মূলত সবচেয়ে বড় পরাজয় হয়েছে আইএসের। তবে কুর্দিদের অবস্থানও বেশ শক্ত। আইএসের শক্ত ঘাঁটি রাকা থেকে আইএস কে বিতাড়িত করে রাকা, হাসাকাহসহ বিস্তৃণ অঞ্চল এখন কুর্দিদের দখলে।

সিরিয়া যুদ্ধ
সিরিয়ায় কোন এলাকা কার দখলে? লাল চিহ্নিত এলাকা আসাদ বাহিনী, হলুদ কুর্দিদের ও ছাই রঙের এলাকা বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে (সুত্রঃ আল জাজিরা)

যুদ্ধে যদি আসাদ বাহিনী সকল এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েও নেয় তবুও মনে হচ্ছে এ এলাকায় শান্তি সহজে আসবে না। বিদ্রোহী পক্ষ ও আইএস পরাজয়ের পর শান্ত হয়ে যাবে এটা ভাবা যায় না। তারা তখন সম্মুখ যুদ্ধের বদলে হয়ত চোরাগোপ্তা বোমা হামলা চালাবে। আবার এদিকে কুর্দিদের দখলকৃত এলাকায় তুরস্কের অভিযান হয়ত অব্যহত থাকবে। যেমন কিছুদিন আগেই আফরিন এলাকায় সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছে তুরস্ক। আবার আসাদও চাইবে না সিরিয়ার এত বড় এলাকা নিজের নিয়ন্ত্রণে না রেখে কুর্দিদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

ফলে জটিল এ পরিস্থিতিতে একমাত্র সমাধান হতে পারে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহলের সদিচ্ছা। নইলে দীর্ঘমেয়াদি  ‘গৃহযুদ্ধ’ এর অন্ধকারে ডুবে থাকবে এই দেশ। যদি সকল পক্ষ নিজেদের স্বার্থের চিন্তা ত্যাগ করে এ অঞ্চলের অসহায় মানুষের কথা ভেবে, নিষ্পাপ শিশুদের কথাভেবে সত্যি সমাধান চায় তাহলেই কেবল সমাধান আসবে। জাতিসংঘের নিতে হবে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ, বিবদমান পক্ষের মাঝে একটি শান্তিচুক্তি করে মোতায়েন করতে হবে শান্তিরক্ষী বাহিনী। কিন্তু এটা মনে হয় শুধু কল্পনাতেই সম্ভব। নিজ নিজ স্বার্থকে গুরুত্ব না দিয়ে শান্তির কথা ভাবার মত কোন পক্ষ কি আছে?

লেখকঃ আসিফ আল রাজীব