লিওনেল মেসির বেতনের অঙ্ক প্রকাশ করেছে ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে’কিপ। পিএসজিতে তিন বছরের চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ করলে ১১০ মিলিয়ন ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১০০ কোটি টাকা) আয় করবেন আর্জেন্টাইন তারকা।
বার্সেলোনায় চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায়, ফ্রী ট্রান্সফার হিসেবে মেসি কে দলে ভিরিয়েছে পিএসজি। ৩৪ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডকে কিনতে একটি পয়সাও খরচ করতে হয়নি ফরাসি ক্লাবটিকে।
পিএসজিতে এ মৌসুমে ৩ কোটি ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০০ কোটি ১৮ লাখ টাকা) আয় করবেন মেসি। পিএসজির সাথে মেসির প্রাথমিক চুক্তি টা ২ বছরের হলেও, সেটা আরো আক বছর বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
সে ক্ষেত্রে বাকি দুই মৌসুমে মেসির বেতন বাড়বে, আনুগত্য বোনাসের শর্ত হিসেবে এবারের বেতনের সঙ্গে আরও ১ কোটি ইউরো যোগ হবে। অর্থাৎ মেসি যদি পরের দুটি মৌসুমেও পিএসজিতে থাকেন, তাহলে প্রতি মৌসুমে ৪ কোটি ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪০০ কোটি ২৪ লাখ টাকা) করে বেতন পাবেন।
ফরাসি ক্লাবটিতে মেসির এ বেতনের অঙ্ক নেইমারের বেতনের সমান। সম্প্রতি পিএসজির সঙ্গে ২০২৫ সাল পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করেছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার। যদিও তাঁর চুক্তিপত্রে মেসির মতো মৌসুমের পর মৌসুম কাটানোর সঙ্গে সঙ্গে বেতনের অঙ্কও বাড়ানোর শর্ত নেই; বরং প্যারিসে থাকার মেয়াদ বাড়ার সঙ্গে উল্টোটা (বেতনের অঙ্ক কমা) হতে পারে বলে জানিয়েছে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা।
তবে মেসির এই বেতনের অঙ্ক ব্যক্তিগত কিংবা দলীয় কোনো বোনাস সংযুক্ত করা হয়নি। ধরা যাক, আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের চুক্তিপত্রে যদি এমন কোনো শর্ত থাকে, মৌসুমে এত গোল করলে এত টাকা বোনাস কিংবা পিএসজি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতলে এত টাকা বোনাস—এসব হিসাব বাইরে রেখে বেতনের অঙ্কটা প্রকাশ করেছে লে’কিপ।
মেসির বেতন বার্ষিক খাতে পরিশোধের ক্ষেত্রে একটি কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় রয়েছে। ৩ কোটি ইউরো বেতনের মধ্যে ১০ লাখ ইউরো ‘পিএসজি ফ্যান টোকেন’-এর মাধ্যমে পরিশোধ করবে ক্লাবটি। এটি পিএসজির ক্রিপ্টোকারেন্সি (বিটকয়েনের মতো)। এভাবে বেতন দেওয়ার মাধ্যমে ফরাসি ক্লাবটি মৌসুমে আড়াই থেকে তিন কোটি ইউরো লাভের মুখ দেখবে। ক্রিপ্টো ডট কমের সঙ্গে চুক্তির সময় পিএসজির এই ফ্যান টোকেনের দাম অনেক কম ছিল।
কিন্তু মেসিকে দলে টানার পরই পিএসজির এই ফ্যান টোকেনের দাম ১৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। মেসি যাওয়ার দু-তিন দিন আগে থেকে এই টোকেনের কেনাবেচার অঙ্কটা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২০ কোটি ডলার!
ফ্যান টোকেন কী?
এই টোকেন কেনা সমর্থকেরা একটা অ্যাপের মাধ্যমে ক্লাবের বেশ কিছু ব্যাপারে মতামত রাখতে পারবেন। তবে সেটা ক্লাবের প্রশাসন কিংবা কোচ-খেলোয়াড়ের ভাগ্য নির্ধারণের মতো অত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়।
ম্যাচের দিনগুলোয় ক্লাবের অধিনায়কের বাহুবন্ধনীতে কী বার্তা লেখা থাকবে, দলের বাসের গায়ে নকশা কেমন হতে পারে, নিজেদের স্টেডিয়ামে খেলোয়াড়দের টানেলের পর্দা কেমন হবে…এসব ব্যাপারে ভোট দিতে পারবেন পিএসজির ফ্যান টোকেন কেনা সমর্থকেরা, এমনটাই জানাচ্ছে বিবিসি।
মৌসুম শেষে সেরা খেলোয়াড় কিংবা সেরা গোল নির্বাচনেও ভোট দিতে পারবেন তাঁরা। মাঝেমধ্যে মূল দলের খেলোয়াড়দের কারও সঙ্গে টোকেন কেনা সমর্থকদের মধ্যে ভাগ্যবান দু-একজনের ‘ভিডিও কল’-এ কথা বলার সুযোগ আসতে পারে।