আজ বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের মত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের অচল হয়ে পড়ে পুরো রাজধানী। রবিবার বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সড়কে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাহত হয় যোগাযোগ ব্যবস্থা। চলমান এই আন্দোলনে গতকাল বুধবার রাজধানীতে চলাচলকারী বেশিরভাগ পরিবহনের বাস নামেনি। ফলে অফিসগামী ও অফিস ফেরত লোকজনকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়।
দুর্ভোগের শিকার নগরবাসী এরপরও বলছেন, শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে। পরিবহন সেক্টরের এই নৈরাজ্যের সমাধান হওয়া জরুরি।
শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আন্দোলনের মুখে গতকাল বিকালে ঘাতক বাসের মালিক শাহাদত হোসেনকে র্যাব গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় জড়িত অপর দুইটি বাসের মালিক এখনও গ্রেফতার হয়নি।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গতকাল শনির আখড়া, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়, শাহবাগ, রামপুরা, খিলক্ষেত, মতিঝিল, ভাটারা, মিরপুর-১০ নম্বর গোল চক্কর, ফার্মগেট, বিমানবন্দর গোল চক্কর, হাউজ বিল্ডিং মোড়, ধানমন্ডি-২৭ নম্বর, নিউমার্কেট ও মোহাম্মদপুর এলাকায় সড়কগুলোতে অবস্থান নিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করে। এসময় দুই একটি স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে বাস ভাংচুর করা হয়।
তবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, বাস আটকের পর বহিরাগতরা আকষ্মিকভাবে বাস ভাংচুর করে। কাওরানবাজারে এরকম বাস ভাংচুর করার অভিযোগ এক বহিরাগতকে শিক্ষার্থীরা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। ভাংচুর শেষে বিকালের দিকে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় পড়ে থাকা কাঁচ ঝাড়ু দিয়ে পরিস্কার করে দেয়।
সারা দিনব্যাপী চলতে থাকা এ আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই বাসচালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করে। চালকরা তাদের লাইসেন্স দেখাতে না পারলে, শিক্ষার্থীরা গাড়ির চাবি কেড়ে নিয়ে সেখানেই বাসটি আটকে রাখে। বিভিন্ন স্থানে লাইসেন্সবিহীন চালকের পুলিশের গাড়ি চালনার বিষয়টি ধরা পড়ে। অনেক সার্জেন্টের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় শিক্ষার্থীরা মোটরবাইক আটকে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে কথা শুনিয়ে দেন।
কোথাও কোথাও এর বিপরীত চিত্রও দেখা গেছে, ছাত্ররা পুলিশ সদস্যদের ফুল উপহার দিয়েছে। শনির আখড়ায় একটি ছোট ট্রাকের (পিকআপ) ড্রাইভিং লাইসেন্স তল্লাশি করতে গেলে চালক এক শিক্ষার্থীর ওপর চালিয়ে দেয়। আহমেদ ফারহান ওরফে ফয়সাল নামে ওই শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন গতকাল রাজধানীর বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। গাজীপুর, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।