তবে কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জনপ্রিয় অনলাইন শপ দারাজ?

0
ফুয়াদ আরেফিন

মার্চের প্রথম দিনই বৃহস্পতিবার রকেট ইন্টারনেটের এশিয়ার কার্যক্রম এশিয়া প্যাসিফিক ইন্টারনেট গ্রুপগ্রুপটির একটি কোম্পানি লাইক বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন শুক্রবার বিকেলেই তাদের কয়েকটি কোম্পানি হতে অনেক কর্মকর্তাদের ছাঁটাই করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম জেন রুমস । আর লাজাডা চীনা কোম্পানির কাছে বিক্রি হয়েছে আগেই।এসব তথ্য জানিয়েছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক কোম্পানি মোমেন্টাম ওয়ার্কস।
ফুয়াদ আরেফিন
যারা নতুন-পুরোনো সকল কোম্পানির সর্বশেষ গতিপ্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করে থাকে। আর তা https://thelowdown.co.nz সাইটে প্রকাশ করে। তাই এইব্যাপারে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশে গ্রুপটির অন্যতম ভেঞ্চার দারাজের গন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। দারাজ বাংলাদেশের কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরেই বিক্রির চেষ্টা করে আসছিল বলে শোনা যায়। এবং তারা বিক্রি নিয়ে আলীবাবা গ্রুপের সঙ্গে আলোচনাও এগিয়েছিল। কিন্তু এখনও এর চূড়ান্ত কিছু হয়নি। দারাজ বাংলাদেশের হেড অফ কমার্শিয়াল ফুয়াদ আরেফিন এরসাথে কথা বললে তিনি জানান, আমরা এমন খবর শুনিনি।

এপিএসিআইজি হতে এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা এখনও তাদের জানানো হয়নি। বাংলাদেশে রকেট ইন্টারনেটের ফ্ল্যাট-বাড়ি ও জায়গা-জমি নিয়ে লামুডি, গাড়িতে কারমুডি, খাবার-দাবারে ফুডপান্ডা, নিত্যপণ্যের মার্কেটপ্লেস (বিক্রির মাধ্যম) কেইমু, দারাজ ডটকম (সরাসরি বিক্রি) ও জব মার্কেটপ্লেস এভারজবস ও অনলাইনে হোটেল বুকিংয়ের মার্কেটপ্লেস জোভাগোসহ সাতটি ভেঞ্চার চালু ছিল।এরমধ্যে কেইমু ডটকম ডটবিডি টিকতে না পেরে ২০১৭ সালে একীভূত হয়ে যায় দারাজের সঙ্গে।

জোভাগো ও টিকতে না পেরে বন্ধ হয়ে যায় একই বছরের ডিসেম্বরে। এভারজবস ধুঁকছে যা না থাকার মতো। আর ফুডপান্ডা তো জার্মানিভিত্তিক ডেলিভারি হিরোর কাছে বিক্রি করে দিয়েছে রকেট।রকেট ইন্টারনেট ও কাতারের ওরিডু গ্র‌ুপের মিলিত ভেঞ্চার হিসেবে ২০১৫ সালে শুরু হয় এপিএসিআইজি। এশিয়ার উদীয়মান যত ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসার সুযোগ রয়েছে সেগুলোকে কাজে লাগানোকেই লক্ষ্য করে তারা যাত্রা শুরু করেছিল।

এপিএসিআইজি এ পর্যন্ত বেশ কিছু বড়সড় কোম্পানি দাঁড় করায় যার মধ্যে এই লামুডি, দারাজ, লাজাডা, জালোরা ও অন্যান্য ভেঞ্চার ছিল।মোমেন্টাম ওয়ার্কস বলছে, এশিয়া থেকে রকেট ইন্টারনেটের ব্যবসা গুটিয়ে নেয়া অস্বাভাবিক নয়। নতুন কোনও ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসার সম্ভাবনা আর নেই, স্থানীয় কোম্পানিগুলো এর মধ্যেই বেশীরভাগ ক্ষেত্রগুলো নিয়ে নিয়েছে। এদিকে এপিএসিআইজির মূল কাজই হচ্ছে পণ্য ও সেবা বাজারজাত করার জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি, স্থানীয় মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বিশেষায়িত ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা দেয়ার ক্ষমতা তাদের নেই।

এ পর্যন্ত তারা যেসব ব্যবসা শক্তভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে সেগুলো এর মধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে।তার মানে এই নয় যে রকেট একেবারেই ব্যর্থ। এশিয়ার ইন্টরনেভিত্তিক কোম্পানিগুলোতে তাদের গভীর অবদান রয়েছে। রকেট ইন্টারনেটের অনেক প্রাক্তন কর্মকর্তা আজ এশিয়ার বড় বড় ইন্টারনেট কোম্পানি, যেমন গোজেক ও শপি শুরু করেছেন বা সেখানে কাজ করছেন।রকেট ইন্টারনেট আসলে সময়ের আগে এশিয়াতে কাজ শুরু করেছিল, তাদের কাজের ওপর ভিত্তি করে অন্যরা নিজেদের প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে। আবার এপিএসিআইজির অনেকগুলো কোম্পানির মডেলে স্থানীয় কোম্পানিগুলো আগে হতেই কাজ শুরু করেছিল । ফলে পরে এসে এপিএসিআইজির ভেঞ্চার সুবিধা করতে পারনি।আসলে বন্ধ হয়ে গেলেও এশিয়াতে রকেট ইন্টারনেটের অবদান অনস্বীকার্য থাকবে।