বগুড়ায় ইঁদুর-পোকায় খাচ্ছে ভিজিএফের চাল

0
বগুড়ায় ইঁদুর-পোকায় খাচ্ছে ভিজিএফের চাল

ঈদুল আজহা উপলক্ষে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ দেয়া ভিজিএফের চাল সম্পূর্ণ বিতরণ করা হয়নি। বরং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এবং ইউপি চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্বে প্রায় চার হাজার কেজি চাল ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ের গোডাউনে পড়ে রয়েছে।

ঈদের পর ১৪ দিন পেরিয়ে গেলেও চাল বিতরণ করা হয়নি। ফলে গোডাউনে পড়ে থাকা দুস্থদের ভিজিএফের চাল খাচ্ছে ইঁদুর আর পোকায়।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র হতে জানা যায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে হতদরিদ্রদের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কার্যক্রম ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) কর্মসূচির আওতায় এই উপজেলার দশটি ইউনিয়নে ২৪ হাজার ৯৮০টি পরিবারের জন্য দশ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় শাহবন্দেগী ইউনিয়নে ২ হাজার ৪৯৮টি পরিবারের অনুকূলে ২৪ দশমিক ৯৮০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু চাল বিতরণের কার্ড নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরোধ তৈরি হয়। এতে বরাদ্দ পাওয়া ভিজিএফের চাল সম্পূর্ণ বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে চার হাজার কেজি চাল পরিষদের গোডাউনেই পড়ে রয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান আল আমিন মন্ডল এ বিষয়ে জানান, “ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা ভিজিএফের সাতশ কার্ড দাবি করেন। তবে তাদের চারশ কার্ড দেয়া হয়। কিন্তু দুস্থদের মধ্যে এসব কার্ড বিতরণ করা হয়নি। তাই কেউ চাল নিতে আসেননি। এ কারণে ওইসব কার্ডের চাল পরিষদের গোডাউনেই পড়ে আছে।”

তিনি আরও জানান, “বিগত সময়ে দলীয় নেতাকর্মীদের যেসব কার্ড দেয়া হয়েছিল তা কালোবাজারে বিক্রি করে দেয়া হয়। এবারও সেই কাজই করা হয়। তাই কার্ড পাওয়া দুস্থ ব্যক্তিদের না এনে দুয়েকজন নেতা তাদের ভাগের ভিজিএফের সব চাল নিতে এলে তাদের দেয়া হয়নি। একপর্যায়ে চাল না পেয়ে বাধার সৃষ্টি করেন তারা। পরবর্তীতে তাদের কার্ডের চালগুলো রেখে বাকি চাল গরিব মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।”

তবে শাহবন্দেগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রিপন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ভিজিএফের চাল বিতরণে চেয়ারম্যান নিজেই অনিয়ম করেছেন। মাস্টাররোলে ভুয়া নাম তালিকা করে এই চাল বিতরণ দেখিয়েছেন। আমরা কেবল চেয়ারম্যানের ওইসব অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়েছি। এছাড়া দলীয়ভাগ হিসেবে আমাদের কোনো ভিজিএফের কার্ডই দেয়া হয়নি। তাই কার্ড বিতরণ না করার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে জানান, “ঈদের দুইদিন আগে ভিজিএফের চালগুলো বিতরণ শুরু করা হয়। কিন্তু সেখানে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গেও চেয়ারম্যান দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে চাল বিতরণে বিশৃঙ্খলার খবর পেয়েই আমি ঘটনাস্থলে যাই। জটিলতা নিরসন করে চাল বিতরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।”