ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে বিল থেকে হযরত আলী নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ওই ব্যক্তির স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরকীয়া প্রেমিক সম্পর্কে ওই নারীর দুলাভাই। পরিকল্পনা মতো স্বামীকে খুন করতে ওই ব্যক্তির কাছে পাঠায় স্ত্রী।
গ্রেফতাররা হলেন, জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার গোরকপুর এলাকার আমান উল্লাহর ছেলে মো. লিয়াকত আলী (৩৫) ও শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার বাঁশকান্দা উল্লাপাড়া এলাকার নিহতের স্ত্রী মোছা. সাবিনা খাতুন (২৮)।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় জেলা গোয়েন্দা শাখার পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এর আগে গত বুধবার জেলার হলুয়াঘাট থেকে সাবিনা খাতুনকে ও শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার বাঁশকান্দা উল্লাপাড়া থোকে লিয়াকত আলীকে গ্রেফতার করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম বলেন, “গ্রেফতাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে কাঁদামাটিতে পুঁতে রাখা মৃত হযরত আলীর একটি মোবাইল, পরনের লুঙ্গি, শার্ট, গেঞ্জি ও হত্যায় ব্যবহৃত গামছা উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।”
পরবর্তীতে গ্রেফতারদের বরাত দিয়ে ওসি জানান, “লিয়াকত আলী রাজধানীর উত্তরা এলাকায় রাজমিস্ত্রী ও রিকশা চালানোর কাজ করতো। গত ১০ বছর আগে সাবিনা খাতুন তার প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে দুলাভাই আসামি লিয়াকতের কাছে চলে যায়। পরে সাবিনা অন্যের বাসা-বাড়িতে আয়ার কাজ নেয়। এ পর্যায়ে লিয়াকত ও সাবিনার মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।”
এ পরকীয়া সম্পর্কের কারণে লিয়াকতের সংসারে অশান্তি দেখা দিলে দু’বছর আগে সাবিনা ঢাকা থেকে তাদের নিজ বাড়িতে চলে আসেন। আনুমানিক আট-নয় মাস আগে সামাজিকভাবে হযরত আলীর সঙ্গে সাবিনার বিয়ে হয়। তাতেও দুলাভাই লিয়াকতের সঙ্গে সাবিনার পরকীয়া প্রেমে ভাটা পড়ে না।
মাসখানেক আগে লিয়াকত ও সাবিনার অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি হযরত আলী হাতেনাতে ধরে ফেলায় তারা হযরত আলীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী গত ২৯ সেপ্টেম্বর সাবিনা মিথ্যা অজুহাতে হযরত আলীকে হত্যার উদ্দেশে শেরপুরের নালিতাবাড়ির গোরকপুর বাজারে লিয়াকতের কাছে পাঠায়। পরে হযরত আলীকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার অজুহাতে হালুয়াঘাট উপজেলার কুতিকুড়া গ্রামে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উলুয়ারকান্দা বিলে নিয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে খুন করে কাঁদায় পুতে রাখা হয় তার লাশ।
ঘটনার একদিন পর গত ৩০ আগস্ট বিকেলে কুতিকুড়া গ্রামের উলুয়ারকান্দা বিল থেকে হযরত আলীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন ৩১ আগস্ট নিহতের ভাই আবু নাসের বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হালুয়াঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।