আবাসিক হল না খুলে সশরীরে আগামী ১ জুলাই থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও অন্যান্য বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে একই তারিখ থেকে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া শুরু হবে৷
মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় উপস্থিত একাধিক সদস্য এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যেসব বিভাগে চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয়ে করোনা পরিস্থিতির জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেসব বিভাগের পরীক্ষা আগামী ১৫ জুন থেকে সশরীরে উপস্থিত থেকে নেওয়া হবে।
করোনার জন্য দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ৫ থেকে ৬ মাসের সেশন জট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা হওয়ায় সেশন জট নিরসনে ‘ডিজাস্টার রিকোভারি প্ল্যান’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেশন জট কমিয়ে আনা হবে। এ লক্ষ্যে ৬ মাসের সেমিস্টার কমিয়ে ৪ মাস এবং ইয়ার ভিত্তিক বিভাগের ক্ষেত্রে ৮ মাসে কোর্স সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং পরীক্ষাগুলো বিভিন্ন শিফটে ভাগ করে নেওয়া হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
এছাড়াও সময়সীমার উপর ভিত্তি করে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে৷
অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করতে একটি সফটওয়্যার তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে আছে।
সশরীরে পরীক্ষা নেওয়া হলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ অন্যান্য বন্ধের দিনও পরীক্ষা নেওয়া হবে৷ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে একদিনে বিভিন্ন শিফটে পরীক্ষা নেওয়া হবে৷
তবে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভ্যস্ততার জন্য ১০ শতাংশ ক্লাস এবং মিডটার্ম, টিউটোরিয়াল, টার্মপেপার, অ্যাসাইনমেন্টের ৫০ শতাংশ একাডেমিক কাজকর্ম অনলাইনে নেওয়া হবে৷
সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আগামী ১৫ জুন থেকে সশরীরে স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেওয়া হবে। আর আগামী পয়লা জুলাই থেকে চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো নেওয়া হবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সশরীরে আর না হলে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে, আবাসিক হল খোলা হবে না।
পরীক্ষা ও আবাসিক হল খোলার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ‘হল খুলে পরীক্ষা নেওয়ার’ দাবিতে আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নিতে গেলে শিক্ষার্থীরা কোথায় থাকবে? সবার পক্ষে মেসে থেকে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। পরবর্তীতে আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করবো।’
সাত কলেজের পরীক্ষাও চলবে
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজের বিভিন্ন বর্ষের স্থগিত পরীক্ষাগুলোও নেওয়া শুরু করতে পারবে বলে জানিয়েছেন সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল।
তিনি বলেন, ‘সাত কলেজের স্থগিত পরীক্ষাগুলো সশরীরে নেওয়া হবে। আগামীকাল আমরা রুটিন নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে পাঠাবো। আগামী ১৪ জুন সাত কলেজের প্রিন্সিপ্যালদের সঙ্গে এ বিষয়ে একটি সভা হবে। সেখানে কলেজগুলোর অন্যান্য সমস্যা সমাধান করা হবে।