কুরআনের হাফেজ হওয়ার স্বীকৃতি নিতে এসে লাশ হতে হল প্রায় শতাধিক কিশোরকে

0

আফগানিস্তানের কুন্দুজ প্রদেশের দাশত-ই-আর্চি জেলার একটি মাদ্রাসায় চলছে নতুন হাফেজ হওয়া কিশোর শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরন ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে কিশোর হাফেজরা তাদের পিতা মাতার সাথে নতুন জামা পরে, গলায় মালা পরে বসে আছে।  উপস্থিত আছে তাদের শিক্ষকরা। আচমকা আফগান সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার ও বিমান হামলা! মুহুর্তেই প্রাণ হারালো শতাধিক মানুষ। যার মাঝে রয়েছে কুরআনে হাফেজ হওয়া ১১ থেকে ১২ বছরের কিশোর, তাদের শিক্ষক ও অভিভাবক।

এইসব কিশোর হাফেজরা এসেছিল পুরস্কার নিতে অথচ হতে হল লাশ!

আফগান সামরিক বাহিনীর অভিযোগ, অনুষ্ঠানে তালেবান নেতাসহ বেশ কিছু তালেবান সদস্য উপস্থিত ছিল। তাদের লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছে। এতে ৯ জন তালেবান কমান্ডার সহ ৩০ জন তালেবান নিহত হয়েছে। বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে আফগান বাহিনী।

তবে তালেবানদের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানের সময় তাদের কোন সদস্যের সেখানে উপস্থিত থাকার কথা অস্বীকার করা হয়েছে।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছে- অনুষ্ঠানে ৩০ পারা মুখস্ত সম্পন্ন করা হাফেজ কিশোররা তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে উপস্থিত ছিল পুরস্কার ও স্বীকৃতি গ্রহণের জন্য। সেই সাথে এলাকার কিছু বেসমারিক নাগরিকও ছিল। এই এলাকায় তালেবানদের ভাল সমর্থন থাকায় কিছু তালেবান সদস্যও উপস্থিত ছিল। অনুষ্ঠান ভালোমতই চলছিল, হঠাৎ বিমান হামলায় এসব কিশোর, তাদের শিক্ষক, অভিভাবক ও বেসমারিক লোকদের মধ্যে ১৫০ জন নিহত ও আহত হয়। যাদের বেশিরভাগই শিশু কিশোর। সন্তানের হাফেজ হওয়ার স্বীকৃতির অনুষ্ঠানে এসে  সন্তানের লাশ নিয়ে ফিরতে হল অনেক অভিভাবককে। অনেকে আবার সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে আর্তনাদ করছেন। যুদ্ধের নামে বারবার এভাবে নিরপরাধ বেসমারিক নাগরিক হত্যা, বিশেষ করে শিশু, কিশোর ও নারী হত্যা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

নিহত কিশোরদের একাংশ

আফগানিস্তানে নিয়োজিত জাতিসংঘের মিশন ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবে বলে জানিয়েছে।

সুত্রঃ আল জাজিরা