ইরানে চলমান বিক্ষোভে ইন্ধন দেওয়ার জন্য সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনকে দায়ী করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান আলি শামখানি। তিনি দাবি করেন, ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হ্যাশট্যাগের প্রচারণাগুলো সৌদি মার্কিন জোটের নির্দেশনা অনুযায়ী করা হচ্ছে। শামখানিকে উদ্ধৃত করে ইরানি সংবাদমাধ্যম প্রেস টেভি খবরটি জানানো হয়েছে।
খাদ্য দ্রব্যগুলোর দাম বৃদ্ধি এবং নতুন বছরের বাজেটে জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধির সরকারি প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ২৮ ডিসেম্বর ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর মাশহাদে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে তা একসময় তেহরান ও অন্যান্য শহরে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে অর্থনৈতিক সংকট এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভের সূচনা হলেও এরইমধ্যে তা রাজনৈতিক সমাবেশে পরিণত হয়েছে। এমনকি সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামিনিসহ ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে ক্ষমতায় থাকা ধর্মীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে বিক্ষোভকারীদের মাঝে।
সোমবার (১ জানুয়ারি) শামখানি অভিযোগ করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাদ্যম ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশ ইরানের বিরুদ্ধে ‘ছায়াযুদ্ধ’ চালাচ্ছে। তার দাবি, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও সৌদি আরব ইরানের সাম্প্রতিক উত্তেজনার নেপথ্যে রয়েছে। শামকানি বলেন, ‘আমরা বিশ্লেষণ করে জানতে পেরেছি, ইরানের বিরুদ্ধে নতুন হ্যাশট্যাগগুলোর ২৭ শতাংশ সৌদি আরবের তৈরি করা।’ শামখানির দাবি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরানের অগ্রগতি ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে বিদেশি শক্তি এই হস্তক্ষেপ চালাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে ইরানে সংঘটিত ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই দেশটিকে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় পরিসরে শক্ত প্রতিপক্ষ বিবেচনা করে আসছে সৌদি আরব। সুন্নি মুসলিমপন্থী সৌদি আরবের আশঙ্কা, শিয়াপন্থী ইরান তাদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। ইরাকযুদ্ধ ও আরব বসন্তের সুযোগ নিয়ে বাড়াতে পারে অঞ্চলগত প্রভাব। বাগদাদ, দামেস্ক, সানা ও বৈরুতের ধারাবাহিকতায় তেহরান মধ্যপ্রাচ্যের বাদবাকি দেশগুলোকে নিজেদের কব্জায় নিতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে সৌদি আরবের। এছাড়া ট্রাম্পের শাসনাধীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তেহরানের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। সিরিয়া ও ইয়েমেনে যুদ্ধ পররাষ্ট্রনীতি এবং ২০১৫ সালে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে দুই দেশের টানাপড়েন বেড়েছে।