উড়ছে হেলিকপ্টার, পুড়ছে ঘরবাড়ি!

0

থেমে নেই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে সে দেশের সেনাবাহিনীর তাণ্ডব। প্রতিদিন একের পর এক গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গুলিবর্ষণ করা হচ্ছে সাধারণ মানুষের ওপর। যাকে যেভাবে পাচ্ছে হত্যা করা হচ্ছে নির্মমভাবে। এ কারণে রাখাইন রাজ্য থেকে আজও পালিয়ে আসছে হাজার মানুষ।
সেনাবাহিনীর তাণ্ডব

মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট সকালে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ধামনখালী সীমান্ত দিয়ে আসা অসংখ্য রোহিঙ্গা নারীপুরুষের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।

ওই সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে আসা রাখাইন রাজ্যের মাদ্রাসার শিক্ষক মৌলভী জুনায়েদ আহমদ বলেন, ‘আমি ঢেঁকিবনিয়ার মিয়ারপাড়া গ্রামের একটি ফোরকানিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করি। সোমবার (২৮ আগস্ট) হঠাৎ করেই একদল সেনাবাহিনী (তার ভাষায় লুন্ঠিত বাহিনী) এসে মাদ্রাসা থেকে আমাকে আটক করে। মুহূর্তে মাদ্রাসাটি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আমাকেসহ আরও অনেককেই আটক করে একসঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে ধামনখালী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসি।

উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রবেশদ্বারে দেখা মেলে ৬০ বছর বয়সী মেহেরুন্নেছার। তিনি বলেন, ‘রাখাইনে আর যাওয়া হবে না। কারণ, সেনাবাহিনী পুরো রাখাইনজুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে। হেলিকপ্টার চক্কর দিয়ে রাখাইনের বিভিন্ন গ্রামে বোমা ফেলছে। এ কারণে একের পর এক গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।’

রাখাইনের অবস্থা খুবই ভয়াবহ উল্লেখ করে ওই রাজ্যের ঢেঁকিবনিয়া ইউনিয়নের মিয়ারপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ কালুর ছেলে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘রাখাইনে হয়তো আর বসবাস করা যাবে না। এখন কী করবো ভেবে পাচ্ছি না। স্ত্রী, ছেলেমেয়ে নিয়ে এখন কোথায় যাবো, কী করবো, ক্যাম্পে গিয়েও সন্তানের পেটে কী দেওয়া হবে, তা ভেবে পাচ্ছি না।

সরেজমিনে মিয়ানমার সীমান্তের একাধিক পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের আকাশে কিছুক্ষণ পর পর একটি হেলিকপ্টার চক্কর দিয়ে পুনরায় মংডু শহরের দিকে চলে যাচ্ছে ।

রাখাইনে সহিংসতার পর থেকেই এভাবে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা গেছে। সর্বশেষ ঘুমধুন সীমান্তের কাছাকাছি সেদেশের ক্যাম্পে ল্যান্ড করছে ওই হেলিকপ্টারটি। পরে হেলিকপ্টারটি চক্কর দেওয়ার পরপরই সীমান্তের কাছাকাছি রাখাইনের বিভিন্ন জায়গায় আগুনের ধোঁয়া দেখা যায়। শোনা যায় বিকট শব্দের গুলি ও মর্টার শেলের আওয়াজ।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে