সিলেটে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আর মৃতের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে । পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিলেও কঠোর বিধিনিষেধ অনেকটাই শিথিল হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের মতে, রাস্তাঘাটে লোকজনের চলাচল বেড়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা এখনো মানুষের মাঝে লক্ষণীয়। শুধু অফিস-আদালত আর গণপরিবহন বন্ধ তাছাড়া বাকি সব কিছুই বিগত দিনের তুলনায় স্বাভাবিকই চলছে।
গত শনিবার সকালে সিলেটের সড়কগুলোতে যানবাহন ও রিকশার সংখ্যা অনেক কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। ব্যস্ত হয়ে ওঠে নগরী। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যেখানে বের হওয়া নিষেধ সেখানে ছোট-খাটো প্রয়োজনে অনেককে বের হতে দেখা গেছে।
সকাল থেকেই দেখা যায়, সিলেট নগরীর প্রবেশদ্বার দক্ষিণ সুরমা, কুমারগাঁও, বিমানবন্দর সড়ক, সুরমা গেইট, শেখঘাট পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্ট থাকলেও তা ছিল একদমই ঢিলেঢালা। তবে বিনা প্রয়োজনে বের হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জরিমানা করেছে। সেই সাথে যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থাও গ্রহণ করছে।
সর্বশেষ ১০ দিনে সিলেটজুড়ে করোনাক্রান্ত হয়ে ৩৯ জনের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত বছরের মার্চে দেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এত কম সময়ে সিলেট অঞ্চল এত বেশি মৃত্যু দেখেনি। এই ১০ দিনে নতুন সংক্রমণ হয়েছে ২ হাজার ৯৬০ জন এবং একই সময়ে সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যা মাত্র ১ হাজার ৬০ জন।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায় জানান, কঠোর লকডাউনে সিসিকের অভিযান সবসময় অব্যাহত আছে। প্রতিদিন অভিযান চালিয়ে জরিমানাও করা হচ্ছে, সঙ্গে জনগণকে সর্তক করে দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, নিজের জীবন রক্ষার জন্য সবার আগে আমাদের নিজেদেরকেই সচেতন হতে হবে। আমরা নিজেরা সচেতন না হলে জরিমানা দিয়ে কিছু হবে না। তাই সবাইকে সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানাই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নূরে আলম শামীম বলেন, সরকারের নির্দেশিত কঠোর লকডাউন অবশ্যই সবাইকে কঠোরভাবে মানতে হবে। একান্ত জরুরি প্রয়োজনে যদি কেউ বেরও হয় তবে তাকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় সংক্রমণ ঠেকানো অসম্ভব।
এছাড়াও সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, করোনাভাইরাস সম্পর্কে মানুষ যদি নিজে থেকে সচেতন না হয়, তবে পুলিশের পক্ষে মানুষকে নিয়ন্ত্রণ ও সচেতন করা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য । তবুও আমাদের পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।