কবিতা : কোনো এক চন্দ্রাঘাতে

0
কোনো এক চন্দ্রাঘাতে

নিউজ ইনসাইড ২৪ এর সাহিত্য পাতার আজকের আয়োজন কবিতা। আমরা বাছাইকৃত বেশ কিছু কবিতা দিয়ে সাজিয়েছি আমাদের এই পাতাটি।

কোন এক চন্দ্রাঘাতে
অনিরুদ্ধ

চন্দ্রাহত আমি আজ এই ক্ষ্যাপাটে জ্যোৎস্নায়,
নিঝুম নিস্তব্ধতায় শূণ্যতার ঘূর্ণিবায়;
সব চাওয়া পা’য়ে ঠেলে কেউ কেউ এভাবেই চলে যায়,
যেতে হয়;
এভাবে কখনো দেখা হবে, হতে পারে হঠাৎ
আসেনি ভাবনায় ;
স্মৃতির আয়নায়,
উঠে আসে প্রণয়ের সেই সব দিন, ব্যর্থ রাত,
ছিলে তুমি,
কিংবা আমি,
কতটা অসহায়।
এলোমেলো পথ বেয়ে, অনেকটা দুরে যেয়ে………
ভেবেছিলে তুমি,
কিংবা আমি,
আছি বুঝি ভালো বেশ, উত্তপ্ত সফলতায়;
কেন এইভাবে দেখা হলো হায় ?
মসৃণ পথ বুঝি মূহুর্তেই ক্ষয়ে গেল জীর্ণতায়,
আলোকিত ভরা জ্যোৎস্নায়
সব ফ্যাকাশে হয়ে যায়,
চন্দ্রাহত আমি তা’য়, শূণ্য ছাঁয়ায়,
নীরব নিমগ্নতায়;
বহুদিন আগে যে কথা হয়ে ছিল চোখে চোখে,
ক্ষয়ে ছিল কোনো এক ক্ষ্যাপাটে জল জ্যোৎস্নায়,
নিঝুম নিস্তব্ধতায় শূণ্যতার ঘূর্ণিবায়;
আবারও, আরেকটিবার ফিরে যেতে মন চায়,
তোমার হাতটি ধরে সব চাওয়া শূণ্য করে,
সেই ক্ষণে, সেই চন্দ্রালোকের ছাঁয়ায়,
তবুও……………
সব চাওয়া পা’য়ে ঠেলে কেউ কেউ এভাবেই চলে যায়,
যেতে হয়,নীল বেদনায়;
এভাবে কখনো দেখা হবে, হতে পারে হঠাৎ
আসেনি ভাবনায়।

প্রিয়তমা

বেলা শেষে

আসিফ শুভ্র

প্রিয়তমা …..
মনে পড়ে !
যুগ্মভুরু কুঁচকে যারপরনাই বিরক্ত হয়েছিলে ,
যেদিন ক্যাম্পাসের ঐ নরম দূর্বাঘাসে বসে
তোমায় আবৃত্তিতে শুনিয়েছিলাম –
জীবনানন্দের …. ‘ কুড়ি বছর পরে ‘ কবিতাটা ।
সুকান্তের ‘ দেশলাইয়ের কাঠি ‘
শেষ হওয়া মাত্রই উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিলে –
‘ উফ ! অসহ্য …. কবিতার মাথামুন্ডু কিছু বুঝি ? ‘
রুদ্র তখন বিরক্তিতে সস্তা সিগারেট জ্বালিয়ে ,
ধমকের সুরে আমায় বলেছিলো –
‘ বাদ দে পাগলা ! কি শুরু করলি ? ‘
তোমার হনহন বিরক্তিকর প্রস্থান সেদিন দেখেছি ,
বন্ধুমহলে উন্মাদ ডাকটাও কত্তো শুনেছি !

কালের দু:সহ বিবর্তনে ,
নিষ্পাপ দূর্বাঘাসগুলোকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে –
উলঙ্গ এই নগরের ইট সুরকি !
জীবনানন্দের বনলতায় পড়েছে ধুলোর আস্তর !

আজ এক যুগ পরে……..
তুমিই উপস্থিত এক আবৃত্তি সন্ধ্যায় !
আজ সুকান্ত , রুদ্রের সৈনিক তুমি ,
জীবনানন্দের -‘ কুড়ি বছর পরে ‘ …..
তোমার চোখে জমায় নোনাজলের ক্ষীর !

স্তম্ভিত আমি ! বাকরুদ্ধ !
আজ ও তো বিড়িখোর রুদ্রের অধরে সেই সস্তা সিগারেট !
সুকান্ত ও তো মহাব্যস্ত –
তার ‘রানার’ আর ‘দেশলাইয়ের কাঠি’টা নিয়েই !
নগরের চুনসুরকির বিষবাষ্পে শুধু হারিয়ে গেছে –
আমাদের অবেলার এক বিরক্তিকর সস্তা প্রেম
আর কিছু নিষ্পাপ দূর্বাঘাস !

পার্থক্য কিছু আছেই বৈকি !
আজ তিন কিংবদন্তীই শক্ত আসন পেয়েছেন –
চির কবিতা বিদ্বেষী তোমার সেই ক্যাকটাসের আত্মায় !
আজ সেখানে ফুটেছে ……
অনির্বচনীয় শুভ্র কিছু নীল পদ্ম !
আফসোস প্রিয় !
ঝরে গেছে শুধু ….. কবিতা প্রেমী তোমার এই উন্মাদ বাউণ্ডুলে প্রেমিকটা ।।

( বেলা শেষে …..
– Asif Soikot (আসিফ শুভ্র)
কাব্যগ্রন্থ – বাউণ্ডুলে কবি আর তার খাতা – প্রথম খন্ড
অমর একুশে বইমেলা ২০১৫ )