বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায়কে সামনে রেখে সার্বিক পরিস্থিতি কূটনীতিকদের সামনে তুলে ধরতে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসতে যাচ্ছে বিএনপি। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির কূটনৈতিক কোরের একটি প্রতিনিধি দল বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বসবেন।
এজন্য এজেন্ডা ঠিক করতে সোমবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে বৈঠক করেছেন দলটির কুটনৈতিক কোরের সদস্যরা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রাত ৮টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী স্থায়ী হয়।
দলীয় সূত্র বলছে, বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং অন্তত ২০টি বিদেশি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে-যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব, তুরস্ক, ইরান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস প্রমুখ। এ ছাড়া ইউএনডিপি, জাইকা, ইউএসএআইডি, এডিপি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকসহ ২০টি বিদেশি সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানের প্রধানদেরও বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার মামলার পুরো বিষয়টি তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এটিই কুটনীতিকদের হাতে তুলে দিয়ে তাদের সার্বিক চিত্র সম্পর্কে অবহিত করবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মামলার এই রায় কীভাবে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে সেটিও তুলে ধরবে বিএনপি।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করবে ঢাকার পঞ্চম জজ আদালত। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের দায়েরকৃত আলোচিত মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামান রায়ের দিন ঠিক করেন।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে এ মামলায় তার সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানও এ মামলার আসামি। মুদ্রা পাচারের দায়ে সাত বছর কারাদণ্ডের রায় মাথায় নিয়ে পালিয়ে আছেন দেশের বাইরে। এ মামলাতেও তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।
যদিও খালেদার আইনজীবী রেজাক খান বলেছেন, ‘এটি একটি অসার মামলা। খালেদা জিয়ার খালাস পাবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। এ মামলা সারহীন। রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। আসামিপক্ষের অধিকাংশ যুক্তিও খণ্ডন করতে পারেনি।’
বিএনপি নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে ষড়যন্ত্র করে দুর্নীতির মামলাকে ব্যবহার করছে। তারা বলছেন, বিএনপি নেত্রীকে শুধু হয়রানি করার জন্য জাল নথি ও ভুয়া তথ্য দিয়ে এ মামলা সাজানো হয়েছে। যদি ন্যায় বিচার ও সঠিক বিচার হয় তাহলে খালেদা জিয়া সব অভিযোগ থেকে মুক্তি পাবেন।