বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শাস্তি ইস্যুতে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কোনও চাপের মুখে পড়তে হয়নি সরকারকে। খালেদা জিয়া তিনদিন কারাবন্দি থাকার পরও এই ইস্যুতে জাতিসংঘের মহাসচিবের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি ছাড়া এখন পর্যন্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বা সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক কোনও চাপ আসেনি বলে জানিয়েছেন দলটির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা।
এছাড়া ঢাকা সফররত যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনও বিষয়টি নিয়ে কোনও মহলে আলোচনা তোলেননি বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। তারা জানিয়েছেন, বিদেশি শক্তিগুলোর সমালোচনার মুখোমুখি পড়তে পারে, এমন ধারণা থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছিল। দেশের প্রচলিত আইনে তহবিল তসরুপের অভিযোগে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়ের করা মামলায় আদালত খালেদা জিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এখানে সরকারের কোনও সম্পৃক্ততা নেই। এমন জবাবই তৈরি করা হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। তবে সেই জবাব এখন পর্যন্ত কেউকে দেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। বিদেশি মহলে জবাব দেওয়ার প্রয়োজন হলেই এই জবাব দেওয়া হবে বলেও জানান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
দলটির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, এই ইস্যুতে বিদেশি গণমাধ্যমগুলো যে সংবাদ পরিবেশন করেছে, তা সরকারের জন্যে ইতিবাচক হয়েছে। বিদেশি গণমাধ্যম কোনও নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করেনি। তবে বিএনপি সরকারকে বিদেশি চাপে ফেলার চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ করেন ক্ষমতাসী দলের নেতারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারক খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই ইস্যুতে আন্তর্জাতিকভাবে কোনও চাপ নেই দল কিংবা সরকারের ওপর।’ তিনি বলেন, ‘আমি পৃথিবীর অন্তত দশটি সংবাদ মাধ্যম দেখেছি, এই নিয়ে কোনও নেতিবাচক সংবাদ বা সরকারের ওপর দোষারোপ করে কোনও সংবাদ পরিবেশন করা হয়নি।’
ফারুক খান বলেন, ‘বিদেশি কোনও শক্তির নেতার ফোন ও বক্তব্যও দেখা যায়নি।’ তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার দণ্ড হয়েছে দেশের প্রচলিত আইনে, এটি স্পষ্ট।’
জানতে চাইলে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, ‘বিষয়টি রাজনৈতিক ছিল না। এটা আইন আদালতের ব্যাপার। প্রচলিত আইনে দীর্ঘ সময় নিয়ে বিচার হয়েছে। এরপর খালেদা জিয়াকে দণ্ড দিয়েছেন আদালত। এখানে চাপ সৃষ্টির কিছু নেই বলেই কোনও বিদেশি চাপ সরকারের ওপর ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘বিদেশি চাপ আসার কোনও কারণ তারা পায়নি বলে দেয়নি।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘‘খালেদা জিয়ার দণ্ড আদালতের বিষয়, আদালত তথ্য-প্রমাণ দেখে রায় দিয়েছে। এখানে সরকারের কিছুই করার ছিল না। এটা বিদেশিরা জানে, মামলায় সরকারের পক্ষ থেকে ‘ইনজাস্টিস’ হয়নি। তাই তাদের প্রতিক্রিয়া নেই।’’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিদেশিদের কাছে ধন্য দিয়েছে, কিন্তু সুবিধা আদায় করতে পারেনি।