জনগণভিত্তিক সমঝোতা ও বন্ধুত্ব চাই ভারতের সাথে: আমু

0

ভারতের সাথে বাংলাদেশের শুধু সরকার বা দলভিত্তিক নয়, জনগণভিত্তিক সমঝোতা ও বন্ধুত্বের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ।

জনগণভিত্তিক সমঝোতা ও বন্ধুত্ব চাই ভারতের সাথে

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভারতের সাথে শুধু সরকার বা দলভিত্তিক নয়, জনগণভিত্তিক সমঝোতার ভিত্তিতে বন্ধুত্ব চাই। উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি চাই। আর এ সম্পর্ক ও বন্ধুত্বের ভিত্তি হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আস্থা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ।
আমির হোসেন আমু আজ শুক্রবার ভারতের কোলকাতায় ‘বে অব বেঙ্গল ইনিসিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল এন্ড ইকনোমিক কো-অপারেশন ‘বিমস্টেক’র তিন দিনব্যাপি এক্সপো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানীত অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের ৭টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত এই আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোটের (বিমস্টেক) এ বছরের এক্সপো’র আয়োজন করেছে ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) ।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আইসিসি আয়োজিত বিমস্টেক এক্সপো-১৭-এর উদ্বোধন করেন ভারতের পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।

শিল্পমন্ত্রী বিমস্টেক’র সদস্য দেশগুলোর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য এলাকা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘এ লক্ষ্যে বিমস্টেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে খুব শিগগিরই সমঝোতা চুক্তি সাক্ষর করতে হবে। অগ্রাধিকারভিত্তিতে জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা চুক্তি সাক্ষর করতে হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের অফুরন্ত সম্ভাবনা কাজে লাগাতে দেশগুলোর মধ্যে কানেকটিভিটিও বাড়াতে হবে।

আজ সন্ধ্যায় ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আমির হোসেন আমু তার বক্তৃতায় বলেছেন, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার শতকরা ২১ ভাগ অর্থাৎ ১ দমমিক ৩ বিলিয়ন মানুষ বিমসটেক জোটভুক্ত দেশগুলোতে বাস করছে।
দেশগুলোর সমষ্টিগত জিডিপির পরিমাণ ৭৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু দেশগুলোর সম্মিলিত বাণিজ্যের পরিমাণ বিশ্ববাণিজ্যের মাত্র ৭ শতাংশ।

তিনি বলেন, এই আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোটের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহায়তার দৃষ্টান্ত এখনও অতি নগণ্য। বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে এ ধরণের জোটের মধ্যে পারস্পরিক সহায়তা, ব্যবস্যা-বাণিজ্যের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর মাধ্যমে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী করা সম্ভব।

আমু বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ সবজি উৎপাদনকারী দেশ। এ ছাড়া, চাল, মিঠা পানির মাছ এবং ছাগল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ স্থান অধিকার করে আছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধ ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিশ্বের ১২৭টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ইউরোপের উল্লেখযোগ্য দেশগুলোতে জাহাজ রপ্তানি করছি। আমাদের সফটওয়ার শিল্পখাত দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। বর্তমানে এখাতে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি হলেও ২০১৮ সাল নাগাদ আমরা সফটওয়ার খাত থেকে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার এ ধরণের উন্নয়নমুখী দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি আরো প্রসারের লক্ষ্যে এমন সময়োপযোগী উদ্যোগ প্রয়োজন।
ইন্ডিয়ান চেম্বার ও কমার্স এর সভাপতি সওয়াত গোয়েনকার সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে এ অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী সাধন পান্ডে, ভারতের পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব প্রশান্ত আগরওয়াল, মিয়ানমারের বিমসটেক প্রতিনিধি লাপাই ঝাউ গুন, ঝাড়খন্ডের শিল্প অধিদপ্তরের সচিব সুনীল কুমার বার্ণওয়াল এবং ইন্ডিয়ান চেম্বার ও কমার্সের সিনিয়র সহসভাপতি রুদ্র চ্যাটার্জী উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে