জীবিত থেকেও হিসাবের খাতায় মৃত অনিল বড়ুয়া

0
খাগড়াছড়ি Khagrachhari

২০০২ সালের ৪ জুন খাগড়াছড়ির কালাচাঁদ মহাজন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণ করেন অনিল বড়ুয়া নামের এক ৭৫ বছর বয়সী ব্যক্তি। তিনি দীঘিনালার পশ্চিম কাঁঠালতলি পাড়ার বাসিন্দা।অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে তিনি পেনশন হিসেবে প্রতি মাসে ৭ হাজার ৬৬৯ টাকা করে পেতেন। কিন্তু চলতি মাসে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে তাঁর ছেলে সুমিত বড়ুয়া পিতার পেনশনের টাকার আনতে গেলে জানতে পারেন, তাঁর পিতা নাকি মারা গেছেন। বাবা জীবিত থাকতেও তাঁর মৃত্যুর কথা শুনে অবশেষে আজ মঙ্গলবার সকালে অনিল বড়ুয়াকে নিয়ে হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে হাজির হন ছেলে সুমিত।

সুমিত বড়ুয়া জানান, তাঁর বাবার পেনশনের টাকাগুলো প্রতি মাসে ব্যাংক থেকে তিনিই গিয়ে তুলে আনেন। কিন্তু চলতি মাসের টাকা তুলতে গিয়ে জানতে পারেন, এবারের পেনশনের টাকা হিসাব নম্বরে জমা হয়নি। পরে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি তাদের অবহিত করা হলে তারা জানায়, তাঁর বাবা মারা গেছেন। সার্ভারে থাকা তথ্যানুযায়ী অনিল বড়ুয়াকে মৃত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ছেলের সঙ্গে হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে হাজির হওয়া অনিল বড়ুয়া জানান, শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণের পর থেকে নিয়মিতই তিনি পেনশনের টাকা পেয়ে আসছিলেন। তিনি এখন অনেক অসুস্থ হওয়ায় ঠিকমতো হাঁটা–চলাও করতে পারেন না। তাই ছেলে সুমিতকে চলতি মাসের পেনশনের টাকা তুলতে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু মৃত্যুর কথা শুনে নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে কার্যালয়ে স্বশরীরে হাজির হন তিনি।

উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের নিরীক্ষক দিলীপ চাকমার সাথে কথা বললে জানা যায়, এখন নতুন নিয়মানুযায়ী পেনশনের টাকা ঢাকা থেকে সরাসরি যার যার ব্যাংক হিসাব নম্বরে জমা হয়। তাই প্রতি মাস অন্তর সুবিধাভোগী ব্যক্তি বেঁচে আছেন কি না, তা যাচাই করা হয়। এসময় মুঠোফোনে খুদেবার্তা পাঠিয়ে প্রত্যেক সুবিধাভোগীকে হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়। কিন্তু সুবিধাভোগী হয়তো বার্তা খেয়াল করেননি। তাই তাকে মৃত হিসেবে দেখানো হয়েছে। তবে মঙ্গলবার সকালে অনিল বড়ুয়া কার্যালয়ে এলে তাঁর হিসাবটি ঠিক করে দেওয়া হয়।