টয়লেটঃ এক প্রেম কথা

0

” ভালোবাসার মানুষের জন্য প্রেমিকেরা তাজমহল বানিয়ে ফেললো, আর শালার আমি একটা Toilet (ল্যান্ট্রিন) ও বানাতে পারলাম না “। অক্ষয় কুমার অভিনীত মুভি “টয়লেট “এর ডায়লগ এটি।

ভারতের শতকরা ৬৫ ভাগ মানুষ এখনো খোলা আকাশের নিচে টয়লেট এর কাজ সারে।জিৎ এবং কোয়েল মল্লিকের “হান্ড্রেড পার্সেন্ট লাভ “সিনেমাতেও ভারতবাসীর টয়লেট এর কষ্টটা দেখানো হয়েছে। সিনেমায় দেখা যায় অক্ষয়ের নববধূ কে রাত চারটায় সময় তার ননদ ঘুম থেকে ডেকে তোলে লোটা পার্টি যাকে বাংলায় বলে বদনা পার্টিতে যাওয়ার জন্য। কারন ভোরের আলো ফুটলে নারীদের এ কর্ম সাধন লজ্জাকর হয়ে পড়বে।সম্ভ্রান্ত ও শিক্ষিত পরিবারের নববধূ ভূমি পেড়নেকর তাই রাগে, ক্ষোভে, অভিমানে অক্ষয়ের সংসার ছেড়ে চলে যায় বাপের বাড়ি।

অক্ষয় কে বলে যায় “যেদিন বাড়িতে টয়লেট বানাতে পারবে সেদিন ই আমাকে ফিরিয়ে এনো তার আগে নয়।স্ত্রী কে ফিরে পেতে অক্ষয় তার বাবাকে অনুরোধ করে বাড়িতে টয়লেট বসানোর। কিন্তু ধর্মভীরু বাবা বলেন “যে বাড়িতে তুলসি দেবির পুজো হয় যে ঘরে ঠাকুর থাকে সে ঘরে টয়লেট বসানোর প্রশ্ন ই ওঠেনা।“

এরপর শুরু হয় অক্ষয়ের টয়লেট এর জন্য বৈপ্লবিক আন্দোলন।

শুধু নিজ ঘরে নয় পুরো সমাজ , গ্রাম এবং দেশব্যাপী শুরু হয় তার এ আন্দোলন। এ সিনেমা প্রমোশন এর জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথেও দেখা করেছেন। কারন প্রধানমন্ত্রীর নিজের ও নির্বাচনী ইশতেহার ছিল “শুদ্ধ ভারত “অর্থাৎ পরিচ্ছন্ন ভারতের। ভারতের সিনেমা সেদেশের মানুষের সমাজের পরিবর্তনের জন্য কত কিছুই না করছে।শিক্ষাব্যবস্থা পরিবর্তন এনেছে থ্রী ইডিয়ট সিনেমা,খেলাধুলায় পরিবর্তন এনেছে চাক দে ইন্ডিয়া, লগান,দঙ্গল,সুলতান এর মতো সিনেমা। ধর্মীয় পরিবর্তন এনেছে পিকে।। এ পরিবর্তন এ বিপ্লব চলছেই।

প্রেমের জন্য টয়লেট বানিয়েছে অক্ষয়

২০১৬য়ের দুই সিনেমা ‘রুস্তম’ ও ‘এয়ারলিফ্ট’য়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার জেতেন অক্ষয়। দুটি সিনেমাতেই দেশপ্রেমিক হিসেবে দেখা গেছে তাকে। চলতি বছর মুক্তি পাওয়া এ তারকার ‘টয়লেট এক প্রেম কথা’ সিনেমাটও অনেকটা সেই ধাঁচের। ভারত সরকারের ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’য়ের শৌচালয় নির্মাণ প্রকল্পের কথা এ সিনেমায় বলা হয়েছে জোরেশোরে। অনেকেই তাই অক্ষয়ের এ সিনেমাকে ‘সরকারি প্রোপাগান্ডা’ বলে অভিহিত করেছেন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাতকারে নিন্দুকদের এ দাবিকে উড়য়ে দিয়ে অক্ষয় বলেন, “টয়লেট এক প্রেম কথা’ কোনো প্রোপাগান্ডা নয়। সামাজিক সমস্যা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতেই এ সিনেমাটি তৈরি করা হয়েছে। সরকারি প্রচারণা বা প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর কোনো বিষয় এতে নেই। আমরা এমন একটি সামাজিক সমস্যা নিয়ে এ সিনেমায় কথা বলেছি যা নিয়ে এ মুহূর্তে ভারত সরকারও সচেতনতা তৈরি করছে। দুটো বিষয় একই সময়ে ঘটেছে। এতে আমাদের কিছু করার নেই।”

যারা হিন্দী সিনেমার কথা শুনলেই কিছু আপত্তিকর দৃশ্যের কারনে সপরিবারে দেখার কথা ভাবতেই পারেন না তাদের আশ্বস্ত করছি এই সিনেমাটি পরিবার নিয়ে দেখার মতো ছবি। আরেকটি তথ্য এই সিনেমাটির কাহিনী এক বাস্তব দম্পতির গল্প নিয়ে।

অভিনেতাঃ অক্ষয় কুমার, ভূমি পেড়নেকর, দিবেন্দ্যু, সুধীর পান্ডে, অনুপম খের
পরিচালকঃ শ্রী নারায়ণ সিং
ছবির ধরনঃ ড্রামা, কমেডি
সময়সীমাঃ ২ ঘন্টা ৪১ মিঃ

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে