দেশের সর্ববৃহৎ ঈদুল ফিতরের জামাতকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠ ও আশপাশ এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। অতীতের সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা শতভাগ নিশ্চিত করা হয়েছে বলে সংশ্নিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়।
বিভিন্ন বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জড়িত সদস্যরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। কোনো সন্দেহভাজন লোক যেন নিরাপত্তাবলয় অতিক্রম করে মাঠে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মাঠের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য বোমা শনাক্ত ও নিষ্ফ্ক্রিয়করণ দল শোলাকিয়া মাঠে মেটাল ডিটেক্টরের সাহায্যে ইতিমধ্যে অনুসন্ধান কাজ শেষ করেছে। পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, নিরাপত্তার কাজের যাবতীয় মালপত্র আসার পর মাঠ ও আশপাশ এলাকায় বিশেষ নজরদারি নিশ্চিত করা হয়েছে।
মাঠের ২৮টি প্রবেশ পথে হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে শরীর তল্লাশির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঈদের আগের দিন থেকে শহরে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে। সাদা পোশাকে পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। এবার জামাত শুরু হবে সকাল ১০টায়। জামাতে ইমামতি করবেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।
জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, এবারও কিশোরগঞ্জে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অপরূপ সাজে সাজানো হয়েছে মাঠ ও আশপাশ এলাকা। মাঠ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন, মাঠের মেহরাবের চুনকাম, মাঠে দাগ কাটার কাজ, অজুখানা পরিস্কার, নলকূপ বসানোর কাজসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। সবক’টি চেকপোস্টে ২৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল টিম কাজ করবে।
শোলাকিয়ায় নির্বিঘ্নে মুসল্লিদের আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। শোলাকিয়া স্পেশাল সার্ভিস নামে একটি ট্রেন ময়মনসিংহ রেলস্টেশনে থেকে এবং অন্যটি ভৈরব থেকে ৯টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে। উভয় ট্রেন দুটি দুপুর ১২টায় কিশোরগঞ্জ থেকে ভৈরব ও ময়মনসিংহের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এবার দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সাড়ে তিন লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি জামাতে অংশ নেবেন বলে কমিটির লোকজন ধারণা করছেন।