বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম ইন্তেকাল করেছেন।
মঙ্গলবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন যাবৎ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। তার বয়স হয়েছিলো ৯১ বছর। স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম কাতালগঞ্জ জামে মসজিদে মাঠ প্রাঙ্গণে তার প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। তারপর বুধবার বেলা ১১টায় কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাঁ ময়দানে মরহুমের দ্বিতীয় নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। পরে কক্সবাজার শহরের বইল্ল্যাপাড়া কবরস্থানে তাকে পিতার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
ত্রিশ দশকে জন্ম নেয়া নুরুল ইসলাম চট্টগ্রাম সিটি কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৬৪ সালে তিনি যোগদান করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে। কক্সবাজার মহকুমা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা ও সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন তিনি। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং কক্সবাজার মহকুমা সংগ্রাম পরিষদের প্রতিনিধি হিসেবে চকরিয়ায় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন তিনি। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠতি করে বিভ্ন্নি ক্যাম্পে ট্রেনিংয়ে পাঠান।
স্বাধীনতার পর কক্সবাজার মহকুমা কৃষকলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নুরুল ইসলাম। অতঃপর কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সদস্য নির্বাচিত হন। বাকশাল গঠিত হলে কেন্দ্রীয় পলিটব্যুরো সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ ১৩ বছর দায়িত্ব পালন করেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে। পাশাপাশি কক্সবাজার জেলা থেকে প্রথম প্রকাশিত সাপ্তাহিক পত্রিকা সাপ্তাহিক কক্সবাজার এবং সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত কক্সবাজারের প্রথম দৈনিক পত্রিকা ‘দৈনিক কক্সাবাজার’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি। এছাড়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
মোহাম্মদ নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য শাহিন আকতার, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদস সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুরর রহমান, কক্সবাজার প্রেসক্লাব ও কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল, কক্সবাজার রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রাসেল চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সায়ীদ আলমগীরসহ পেশাজীবী ও সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।