পাকিস্তানের কাসুরে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার শিশু জয়নাবআনসারিরশরীরে পাওয়া অপরাধীর ডিএনএ’র সঙ্গে আটক হওয়া এক ব্যক্তির ডিএনএ’র নমুনা মিলে গেছে। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন খবরটি জানিয়েছে।
তবে এক সন্দেহভাজনকে আটকের কথা জানালেও নমুনা মেলার কথা এখনও স্বীকার করেনি পাঞ্জাব সরকার। মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে তারা। এদিকে ডিএনএ মিলে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ওই সন্দেহভাজনের বাড়ির কাছে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছে স্থানীয়রা। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।
গত ৪ জানুয়ারি কোরআন ক্লাস শেষে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় পাঞ্জাবের কাসুরের ছয় বছরের শিশু জয়নাব আনসারি। বাবা-মা সৌদিতে ওমরাহ পালনে যাওয়ায় কয়েকদিনের জন্য খালার বাড়িতে থাকা শিশুটির মরদেহ ৯ জানুয়ারি শহরের একটি আবর্জনার স্তুপে পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তে নিশ্চিত হওয়া যায় ধর্ষণের পর হত্যার শিকার সে। এক বছরের মধ্যে বারোতম শিশু হিসেবে ধর্ষণের শিকার হওয়া জয়নাবের মৃত্যুতে শুরু হয় বিক্ষোভ। কাসুরের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত হলে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে সেই বিক্ষোভ।
লাহোর হাইকোর্টের তরফে অপরাধীকে ধরতে সময় বেঁধে দেওয়া হলেও সেই সময়ের মধ্যে প্রকৃত অপরাধীর কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। জানানো হয় ফরেনসিক পরীক্ষায় জয়নাবের শরীরে অপরাধীর যে ডিএনএ নমুনা পাওয়া গেছে সেই নমুনাটি আগে ধর্ষণের শিকার হওয়া সাতটি শিশুর শরীরেও পাওয়া গিয়েছিলো। পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে এক হাজারেরও বেশি জনকে আটক করলেও তাদের কারও সঙ্গেই অপরাধীর ডিএনএ নমুনা মিলছিলো না।
মঙ্গলবার ডনের খবরে বলা হয় পুলিশের একটি সূত্র তাদের জানিয়েছে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক হওয়া একজনের সঙ্গে ওই অপরাধীর ডিএনএ নমুনা মিলেছে। তবে পাঞ্জাব সরকারের তরফ থেকে বলা হয় মঙ্গলবার দিনের শেষ দিকে ফরেনসিক পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাবেন তারা। তখনি বিস্তারিত তথ্য সংবাদমাধ্যমকে জানাতে পারবেন।
পাঞ্জাব সরকারের মুখপাত্র মালিক আহমেদ খান ডন নিউজকে জানান, পাখপাত্তান শহর থেকে গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তিকে জয়নাব হত্যাকাণ্ডে দায়ী মনে করার মতো যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ পেয়েছেন তারা। তবে পুলিশের আরেকটি সূত্র বলেছে জয়নাবের বাড়ির কাছ থেকে আটক করা হয়েছে ওই সন্দেহভাজনকে। তার বাড়ি জয়নাবের খালার বাড়ির পাশে।
পুলিশের বরাতে মালিক খান জানান, নিজেকে লুকিয়ে রাখতে সন্দেহভাজন ওই হত্যাকারী ছদ্মবেশ নিতেন। মাঝে মধ্যে দাড়ি রাখা, চশমা পরা ছাড়াও ঘন ঘন পোশাক পাল্টে ফেলতেন তিনি। সন্দেহভাজন ওই হত্যাকারীর কয়েকজন সহযোগিকেও পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান মালিক খান।
মালিক খান জানিয়েছেন, এর আগে ডিএনএ পরীক্ষায় আটক হওয়া সন্দেহভাজনদের নমুনা না মেলার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
তবে পুলিশের আরেকটি সূত্র ডনকে জানিয়েছে, জয়নাবের খালার বাড়ির কাছের বাড়িতে বসবাস করা ওই সন্দেহভাজনের সঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজে জয়নাবের সঙ্গে হাঁটতে দেখা যাওয়া ব্যক্তির সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। ওই সূত্রটি জানায়, এর আগেও আটক করা হয়েছিলো ওই সন্দেহভাজনকে। তবে প্রমাণ না পাওয়ায় তখন ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। এবার যথেষ্ট প্রমাণ হাতে পেয়েই তাকে আটক করা হয়েছে