একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের ইস্যু নতুন করে জোরেশোরে আলোচিত হচ্ছে। একদিকে আওয়ামী লীগসহ সমমনা অধিকাংশ দল সেনা মোতায়েনের বিপক্ষে। অন্যদিকে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো চায় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হোক। এসব দল সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ারও দাবি করছে।
সব মিলিয়ে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে দুপক্ষের অবস্থান দুই মেরুতে। দল ও জোটের এমন অবস্থার মধ্যে খোদ নির্বাচন কমিশনেই দুই রকম বক্তব্য শোনা যাচ্ছে। অবশ্য নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪০টি দলের মধ্যে ১৯টি দলই কমিশনের সংলাপে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের পক্ষে মতামত দিয়েছেন।
এর আগে গত সোমবার নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় মোতায়েন করা হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তিনি এ কথাও বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের চিন্তা নেই। সেনাবাহিনী কীভাবে যুক্ত হবে সেটি বলার সময় এখনো হয়নি। কমিশনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা কমিশনাররা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং আমাদের সবারই অনুভূতি হচ্ছে সেনা মোতায়েন হোক। সময়ই বলে দেবে কীভাবে সেনা মোতায়েন হবে।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের দেওয়া বক্তব্যের ঠিক একদিন পর গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো. নুরুল হুদা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে সেনাবাহিনী নির্বাচনে থাকতে পারে কিনা, এ ব্যাপারে কথাবার্তা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সোমবার সেনা মোতায়েন বিষয়ে দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বক্তব্যটি তার ব্যক্তিগত।
ইসি সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গতকাল বলেছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নির্বাচনের এখনো এক বছর বাকি। কমিশন এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা প্রসঙ্গে সচিব বলেন, এ বিষয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), সংবিধান ও সিআরপিসি সংশোধন করতে হবে। সেনাবাহিনী হচ্ছে দেশ রক্ষাবাহিনী। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী না।
তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি বিবেচনায় কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েন হবে, না অন্য কোনো পদ্ধতিতে হবে।
বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন বিষয়ে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতিপূর্বে দেশে যত সাধারণ নির্বাচন হয়েছে, প্রত্যেকটিতে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনো নির্বাচনেই বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন হয়নি।