নীরবেই চলে গেলেন বীরপ্রতীক কাঁকন বিবি

0
কাঁকন বিবি

কাঁকন বিবি ১৯৭১ সালে তিন দিনের কন্যা সন্তানকে রেখে যুদ্ধে চলে যান। মুক্তিযোদ্ধাদের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করতে গিয়ে তিনি রাজাকারদের হাতে শ্লীলতাহানির শিকার হন। তিনি কেবল মুক্তিবাহিনীর গুপ্তচর হিসেবেই কাজ করেননি, সেই সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধেও অংশ নেন।
কাঁকন বিবি
১৯৭১ এর জুনে পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে ধরা পড়েন কাঁকন বিবি।তাদের বাঙ্কারে দিনের পর দিন অমানুষিকভাবে নির্যাতন সহ্য করতে হয় তাঁকে।
এরপর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তখনই কাঁকন বিবি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেন। জুলাই মাসে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের। তাঁর ওপর দায়িত্ব পড়ে গুপ্তচর হিসেবে বিভিন্ন তথ্য জোগাড়ের। কাঁকন বিবি শুরু করেন পাকিস্তানিদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্যসংগ্রহ করার। তার সংগৃহীত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালিয়ে সফল হন।গুপ্তচরের কাজ করতে গিয়েই দোয়ারা বাজার উপজেলার বাংলাবাজারে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে পুনরায় ধরা পড়েন তিনি।

এবার একনাগাড়ে ৭ দিন পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকারেরা তাকে বিবস্ত্র করে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। লোহার রড গরম করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেয়া হয় ছ্যাঁকা। তখন কাঁকন বিবিকে মৃত ভেবে অজ্ঞান অবস্থায় পাকবাহিনীরা ফেলে রেখে চলে যায়।

পরে তাঁকে উদ্ধার করে বালাট সাব-সেক্টরে নিয়ে যাওয়া হয়। সুস্থ হয়ে তিনি পুনরায় ফিরে যান বাংলাবাজারে। অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষণ নেন। মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলীর তাঁকে প্রশিক্ষণ দেন। এর পরবর্তীকালে তিনি সম্মুখযুদ্ধ আর গুপ্তচর উভয় কাজই শুরু করেন। কাঁকন বিবি প্রায় ২০টি যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

এই বীর মায়ের বিদায়ের বেলায় বিনম্র শ্রদ্ধা রইল।
লেখকঃ রাজীব ধর