পরকীয়ার জেরে ব্যাংক ব্যাবস্থাপকের চিরকুট লিখে আত্মহত্যা

0
হবিগঞ্জ Habiganj

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌর এলাকার একটি বাসা থেকে শেখর কান্তি পাল (৪৫) নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে প্রশাসন। ঘটনাস্থল থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়।

চিরকুটে উল্লেখ ছিল- ‘জুনার মিথ্যাচারের জন্য জীবন শেষ করলাম’। শুক্রবার ভোরে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জুনা আক্তার (৩০) নামে এক নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ইতপূর্বে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ পৌর এলাকার হলিমপুরের একটি বাড়ি থেকে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শেখের কান্তি পাল মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার বরমচানপুর গ্রামের মৃত শংকর লাল পালের পুত্র। তিনি ১ বছর যাবৎ গ্রামীণ ব্যাংকের নবীগঞ্জ শাখায় ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

মামলা ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, চাকরির সুবাদে ইতোপূর্বে চুনারুঘাট শাখায় কর্মরত ছিলেন শেখর কান্তি পাল। স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা গ্রামের জুনা আক্তার (৩০) নামে এক মাদকাসক্ত নারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এ পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

বিষয়টি জানাজানি হলে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে তার স্কুলশিক্ষিকা স্ত্রী সুকলা রাণী পালের পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। পরকীয়ার ঘটনা নিয়ে চুনারুঘাটে তোলপাড় শুরু হলে তিনি বদলি হয়ে নবীগঞ্জ শাখায় স্থানান্তর হয়ে যান। তারপরও ওই নারী তার পিছু ছাড়েনি। প্রায়ই টাকা-পয়সার জন্য তাকে চাপ দিত। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকালে ব্যাংক কর্মকর্তা শেখর কান্তি পালের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা।

অতঃপর পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় লাশের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ। চিরকুটে লেখা ছিল- ‘জুনার মিথ্যাচারের জন্য জীবন শেষ করলাম’। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের উদ্দেশ্যে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

পরকীয়ার সম্পর্কে হতাশ হয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার স্কুলশিক্ষিকা স্ত্রী সুকলা রাণী পাল।

এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতে নবীগঞ্জ থানায় শেখর কান্তি পালের স্ত্রী সুকলা রাণী পাল বাদী হয়ে পরকীয়া প্রেমিকা জুনা আক্তারকে আসামি করে আত্মহত্যার প্ররোচনায় মামলা দায়ের করেন।

শুক্রবার অভিযান চালিয়ে নবীগঞ্জ পৌর এলাকার হলিমপুরের একটি বাসা থেকে জুনা আক্তারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

নবীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ ডালিম আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, পরকীয়ার কারণে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জুনা আক্তার নামে এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জুনার সঙ্গে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার দুপুরে জুনা আক্তারকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।