বাংলাদেশের বিরোধিতা করা মিয়ানমারের লক্ষ্য নয়

0
সেনা মোতায়েন

সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় বাংলাদেশ সীমান্তে নতুন করে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে মিয়ানমার। তারা বলেছে, বাংলাদেশের বিরোধিতা করা তাদের লক্ষ্য নয়। আজ শুক্রবার মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হতে এএফপিকে এ কথা বলেন।
সেনা মোতায়েন
বাংলাদেশ যত দ্রুত সম্ভব মিয়ানমারকে সেনা প্রত্যাহার করতে বলেছে। সেনা মোতায়েনের ঘটনায় দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনা মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টিকে বিলম্বিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এএফপির খবরে জানানো হয়, দুই দেশের শূন্যরেখায় অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গাদের ঘিরে এ সপ্তাহে মিয়ানমার সেনাসমাবেশ বাড়িয়েছে। মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর নৃশংস অভিযানের কারণে গত বছরের আগস্ট মাসে দেশটি থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসছে। এখন পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে এসেছে। এর মধ্যে অধিকাংশ বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে। শূন্যরেখায় এখন প্রায় ছয় হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। দেশ থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিতাড়নে এ ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলে মিয়ানমারকে দোষারোপ করছে জাতিসংঘ।

এ ধরনের অভিযানের বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। হঠাৎ করে সীমান্তে সেনাসংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে জ হতে বলেন, রোহিঙ্গা জঙ্গিদের তৎপরতা সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী তৎপরতার তথ্যের ভিত্তিতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠী আরসার (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) নতুন তৎপরতা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। সেনা মোতায়েনের বিষয়টি বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে কিছু নয়। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ঘটনায় ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ‘দ্রুত ওই এলাকা থেকে সামরিক উপকরণসহ সেনাদের সরিয়ে নিতে’ বলা হয়েছে।

গত কয়েক সপ্তাহে শূন্যরেখায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সেনাদের চাপের মধ্য রয়েছে। মাইকিং করে রোহিঙ্গাদের তারা শূন্যরেখা থেকে চলে যেতে বলেছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও রোহিঙ্গাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গতকাল শূন্যরেখার পাশে নতুন করে আরও ১০০ সেনা ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে টহল দেওয়া শুরু করে।

গত জানুয়ারি মাসে দুই দেশের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে চুক্তি হয়। এর মধ্যে সীমান্তের এই উত্তেজনা প্রত্যাবাসনের বিষয়টিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। ওই সময় প্রস্তুতির অভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়াটি শেষ মুহূর্তে ঝুলে যায়। যথাযথ নিরাপত্তা ও নাগরিকত্বের বিষয়টি নিশ্চিত না করে মিয়ানমারে ফেরত যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিক্ষোভ করে। মিয়ানমার সব সময় দাবি করে আসছে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের নাগরিক। তারা অবৈধভাবে মিয়ানমারে প্রবেশ করে বাস করছে। রাখাইন রাজ্যে বংশপরম্পরায় বাস করে আসা রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে সব ধরনের মৌলিক অধিকার ও সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।