বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়ার সময় দলের তরুণরা যখন তাঁকে আদালতে নিয়ে যায়, তখন প্রতিদিন ৫০-৬০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর উদ্দেশ্য একটাই, বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার চেষ্টা করছে, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন না হয়। সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে সরকার কখনই নির্বাচিত হতে পারবে না। সরকার গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, জনগণের ভোট দেওয়ার ন্যূনতম অধিকার কেড়ে নিয়েছে। কথা বলা, লেখার ও সংগঠন করার সুযোগ নাই। রাস্তায় বের হওয়ার সুযোগ নাই।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে এরা যতভাবে চেষ্টা করছে, এই নির্বাচন যেন না হয়। তারা জানে, সত্যিকার অর্থে যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, তাহলে এই সরকার কখনই আবার নির্বাচিত হয়ে আসতে পারবে না। সে জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে বিধান ছিল, আওয়ামী লীগের দাবিতে সে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা আমরা নিয়ে এসেছিলাম, তা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আজকে তারা দলীয় সরকারের অধীনে জোর করে নির্বাচন করতে চাইছে। জোর করেই করছে এবং বিভিন্ন অজুহাত সৃষ্টি করছে।’
‘এটা প্রমাণিত হয়েছে, এ সরকারের অধীনে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, স্পষ্ট করেই বলেছি, নির্বাচনকালীন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চাই, সমান সুযোগ চাই,’ যোগ করেন মির্জা ফখরুল।
নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া এ দেশের জনগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘যতই নির্যাতন করুন, গ্রেপ্তার করুন, হত্যা-গুম করুন, এ দেশের মানুষকে, জনগণের যে চাওয়া, নিরপেক্ষ সরকারের দাবি থেকে সরাতে পারবেন না।’
ঢাবিতে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার বিষয়ে বিএনপি নেতা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটেছে, তা আওয়ামী লীগের চরিত্র, এটা ছাত্রলীগের নতুন ব্যাপার নয়। তারা বহুবার শিক্ষকদের মেরেছেন, ছাত্রদের মেরেছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিরেক্টরিয়াল যে অথারিটি, তারা যখনই তাদের (ছাত্রলীগ) বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তখনই তারা (ছাত্রলীগ) হাতিয়ার নিয়ে গণতন্ত্রকামী মানুষের ওপর আক্রমণ করেছে।’
এ সময় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে ও কোকোর রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালি, আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ প্রমুখ।