বিমানের পাইলটকে অবতরণের ভুল নির্দেশনা দেয়া হয়, পাইলটের অনুরোধ রাখেনি কন্ট্রোল রুম

0
পাইলট

নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (টিআইএ) ইউএস বাংলার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার আগ মুহূর্তে বিমানের পাইলটের সঙ্গে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সর্বশেষ কথোপকথন সামনে এসেছে। সেখানে বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিধ্বস্ত বিমানের পাইলটকে অবতরণের ভুল নির্দেশনা দেয়া হয়।
পাইলট
অডিও রেকর্ডের শুরুতে শোনা যায়, কন্ট্রোল রুম থেকে বিমানের পাইলটকে বিমানবন্দরের ডানদিকের দুই নাম্বার রানওয়েতে অবতরণের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। পরে পাইলট বলেন, ঠিক আছে স্যার। নির্দেশনা অনুযায়ী পাইলট বিমানটি বিমানবন্দরের ডানদিকে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান কন্ট্রোল রুমে। কিন্তু ডানদিকে রানওয়ে ফ্রি না থাকায় তিনি আবারো কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এসময় তাকে ভিন্ন বার্তা দেয়া হয়। এবারে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি বর্তমান অবস্থানে থাকতে পারবেন?

এসময় পাইলট দুই নাম্বার রানওয়ে ফ্রি করার জন্য কন্ট্রোল রুমের কাছে অনুরোধ জানান। কিন্তু তাকে আবারো ভিন্ন বার্তা দেয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর পাইলট বলেন, স্যার আমি আবারো অনুরোধ করছি রানওয়ে ফ্রি করুন। এর পরপরই বিমানটি বিকট শব্দ করতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পরই বিমানটি ত্রিভূবণ বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে আঁছড়ে পড়ে।

নেপালের ইংরেজি দৈনিক নেপালি টাইমস কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে পাইলটের সর্বশেষ কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড হাতে পেয়েছে। নেপালি এই দৈনিক বলছে, কন্ট্রোল রুম থেকে ভুল বার্তা দেয়ার কারণেই ককপিটে দ্বিধায় পড়েন পাইলট।

এদিকে, বিধ্বস্ত বিমানটির নেপালি এক যাত্রী বলেছেন, ঢাকা থেকে স্বাভাবিকভাবেই বিমানটি উড্ডয়ন করে। কিন্তু কাঠমান্ডুতে অবতরণের সময় এটি অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। প্রসঙ্গত, সোমবার নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০মিনিটে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। নেপালের স্থানীয় দৈনিক হিমালয় টাইমস বলছে, ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের আগেই বিমানটিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। বিধ্স্ত বিমানটিতে চার ক্রুসহ ৭১ আরোহী ছিলেন। এদের মধ্যে ৩৩ জনই নেপালের নাগরিক।

ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মুখপাত্র প্রেম নাথ ঠাকুর বলেন, বিধ্বস্ত বিমানের ভেতর থেকে ২৫ জনকে উদ্ধারের পর কাঠমান্ডু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শিনামঙ্গল প্রশিক্ষণ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে হাসপাতালের পৌঁছানোর পর চিকিৎসক এদের মধ্যে ৭ জনকে মৃত ঘোষণা করেছেন।

তবে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে ত্রিভূবন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এদিকে, বিমান বিধ্বস্তের পর নেপালের পর প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।