বেলজিয়াম-ফ্রান্সের ফাইনালে ওঠার লড়াই আজ

0
বেলজিয়াম-ফ্রান্সের ফাইনালে ওঠার লড়াই আজ

এবারের আসরে সময় যত গড়িয়েছে ধীরে ধীরে ছিটকে গেছে টুর্নামেন্টের ‘ফেভারিট তকমা’ নিয়ে খেলতে আসা দলগুলো। সবাইকে চমকে দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলের বড় মঞ্চে জায়গা করে নিয়েছে বেলিজয়াম ও ফ্রান্স। ৩২ বছর পর আজ আবার সেমিফাইনাল খেলতে নামছে বেলজিয়াম। ’৮৬ বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের প্রতিপক্ষ ছিল আর্জেন্টিনা। আর এবার তাদের প্রতিপক্ষ ফ্রান্স। বাল্টিক সাগরের পাশে সেন্ট পিটার্সবার্গে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবে ইউরোপের দুই প্রতিনিধি।

সেন্ট পিটার্সবার্গে যখন তখন বৃষ্টি হচ্ছে। ঠাণ্ডা বাতাস বইলেও দুই দেশের সমর্থকদের উত্তাপ বাল্টিক সাগরের ঢেউয়ে শব্দ শোনা যাচ্ছে না। দূরে দাঁড়িয়ে জাহাজ, আজকের খেলার আগে সেখানে চলছে উত্সব। বিশ্বকাপের ফাইনালের আগে আজ রাতে অলিখিত একটি ফাইনালের মঞ্চায়ন দেখতে পাবেন সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা।

বেলজিয়ামের সাংবাদকিরা সামারাতে ব্রাজিল এবং বেলজিয়ামের খেলা শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও বলছিলেন, ‘খুব কম চান্স, ব্রাজিলকে হারানোর। আমরা কোনো সুযোগ দেখছি না। কারণ ব্রাজিল অনেক বড় একটা ফুটবল দল। যাদের ঘরে এখনও পাঁচটি ট্রফি সাজানো আছে। নেইমাররা ক্লাব ফুটবলের দুনিয়া মাতিয়ে বেড়ান। তাদের আছে লাখ লাখ ভক্ত।’

তবে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলকে (২-১) বিদায় করে দিয়ে বেলজিয়াম জায়গা করে নেয় সেমিফাইনালে। বেলজিয়ামের সঙ্গে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের অনেক পুরনো দ্বন্দ্ব। বেলজিয়াম বারবার ব্যর্থ হয়েছে এই দক্ষিণ আমেরিকার কারণে। এখন আর সে কথা বড় গলায় বলতে পারবে না দক্ষিণ আমেরিকা। ইতিহাসের পাতায় তাদের ব্যর্থতার যে খবর লেখা ছিল, সেটা পেছনে ঠেলে দিয়েছে একটা জয়। দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে বেলজিয়াম।

বেলজিয়ামের ফুটবল এখন সোনালি প্রজন্মের হাতে। তরী বাইছেন স্প্যানিশ কোচ রবার্তো মার্টিনেজ। তার পাঠশালায় কেভিন ডি ব্রুয়েন, অধিনায়ক ইডেন হ্যাজার্ড, রোমেলু লুকাকু, ভিনসেন্ট কোম্পানিরা দেখিয়েছেন কিভাবে প্রতিপক্ষের অহঙ্কার গুঁড়িয়ে দিতে হয়। আক্রমণভাগে লুকাকু যেন দৈত্যদানব। ব্রুয়েন ধারালো অস্ত্র। ইডেন হ্যাজার্ড কামানের গোলা। ফ্রান্স কাকে রেখে কাকে ঠেকাবে তা নিয়ে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতি। বেলজিয়ামের যে কোনো খেলোয়াড় যে কোনো সময় গোল করতে পারেন। ১৪টি গোল করেছেন ৯ জন।

লুকাকু বলছেন, ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমিফাইনালের খেলাটি হবে ব্রাজিলের বিপক্ষের ম্যাচের চেয়েও কঠিন। মাঝমাঠেও শক্তিশালী বেলজিয়াম। সবচেয়ে বড় দুর্বলতা তাদের রক্ষণে। তাদের একটা কৌতুক আছে ডিফেন্ডার ভিনসেন্ট কোম্পানিকে নিয়ে। বেলজিয়াম বিশ্বের বিখ্যাত কাচের গ্লাস উত্পাদনকারী দেশ। সাংবাদিকরা বলেন, সবচেয়ে দুর্বল কাঁচ হচ্ছেন ভিনসেন্ট কোম্পানি। একটু টোকা লাগলেই চুরমার।’ এমন ডিফেন্ডারকে ভাঙতে পারেনি ব্রাজিলের নেইমার, ফারনাদিনহো, ফিলিপ কোটিনহো, গ্যাব্রিয়েল জেসুসরা। হোক না ক্যাসিমিরো হলুদ কার্ডের শাস্তি থাকায় নামতে পারেননি। তাই বলে মাঝমাঠের পুরো জমিটা ফাঁকা থাকবে?

বিগত ২০১৪ বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে জার্মানিদের বিপক্ষে নেইমার খেলতে পারেননি ইনজুরির কারণে, রক্ষণে হলুদ কার্ডের কারণে থিয়েগো সিলভা নামতে পারেননি। ওখানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল ব্রাজিল। আর এবার ক্যাসিমিরোর মতো মিডফিল্ডার না থাকায় হেরে গেল বেলজিয়ামের কাছেও। ব্রাজিল বেলজিয়ামের গোলপোস্টের পাহারাদার কুর্তোয়াকেই হারাতে পারেনি। একবারও বিপদে ফেলতে পারেনি। গোল একটা হজম করলেও সেটা নিয়ে ব্রাজিলও সন্তুষ্ট ছিল না।