প্রতিবারের মতো এবারও হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে সম্পন্ন হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা।এবারের শোভাযাত্রার সবচেয়ে বড় শিল্প-কাঠামোটি ছিল হরিণ। সোনালি বর্ণের এ হরিণের মধ্য দিয়ে সবাইকে সোনার মানুষ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে চারুকলা অনুষদ থেকে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। চারুকলা অনুষদ থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় ঘুরে টিএসসি হয়ে আবারও চারুকলার সামনে এসে সকাল ১০টায় শেষ হয় ।
আয়োজনের সমন্বয়ক আবু সুফিয়ান জানান, সব মিলিয়ে আটটি শিল্প-কাঠামো ছিল এবারের শোভাযাত্রায়। সোনার হরিণের পাশাপাশি আরও ছিল মহিষ, মাছ ও বক, সূর্য, সাইকেলে চড়া ট্যাপা পুতুল, পাখি, হাতি ও জেলে। বরাবরের মতো আবহমান বাংলার লোকজ সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করে সাজানো হয় এসব শিল্পকাঠামো। প্রতিটি কাঠামোতেই রয়েছে মাতৃত্ব, ভ্রাতৃত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতা-সহমর্মিতার বার্তা। আর বরাবরের মতো রাজা-রানী ও ফুল ছিল সবার সামনে। এরপর একে একে অন্য শিল্প-কাঠামোগুলো ছিল।
ঢাবি’র শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি হাজারো মানুষ অংশ নেন এই শোভাযাত্রায়। মঙ্গল শোভাযাত্রীদের অনেকে সামনে-পেছনে ঢাকঢোলের বাদ্যির সঙ্গে নৃত্য করেন, হাতে ধরা ছিল বিশালাকৃতির রঙবেরঙের মুখোশ। গ্রামবাংলার লোকজ ঐতিহ্য বিভিন্ন অবয়বের টেপা পুতুল আর বাঁশ দিয়ে তৈরি করা বিভিন্ন প্রতীকী শিল্পগুলো যেন বলে যাচ্ছে বাংলার আবহমান ঐতিহ্য-কথন।
পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রায় যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, এ জন্য ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। শোভাযাত্রার দুপাশে নিরাপত্তার জন্য ছিল পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা।
বঙ্গাব্দ ১৪২৫ উদযাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রার এবারে দায়িত্বে ছিল চারুকলা অনুষদের ২০তম (সম্মান) ব্যাচের শিক্ষার্থীদের। তাদের সঙ্গে অনুষদের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক ও চারুশিল্পীরাও যোগ দেন। গত ১৫ মার্চ ছবি এঁকে এ প্রস্তুতি কাজের উদ্বোধন করেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী।