মিঠুন চাকমা হত্যায়, সেনাবাহিনী খুনিদের মদদ দিচ্ছেঃ অভিযোগ বামপন্থিদের

0
মিঠুন

খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সদস্য মিঠুন চাকমাকে হত্যার ঘটনায় এর প্রতিবাদে শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল আয়োজিত এক বিক্ষোভ কর্মসূচিতে গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের সংগঠক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “মিঠুন চাকমারা এক দিনে তৈরি হয়নি। কাউকে মেরে ফেললেই সব কিছু শেষ হয়ে যায় না। বুধবার বেলা ১২টার দিকে মিঠুনকে খাগড়াছড়ি সদরের ইয়োংদা বুদ্ধ বিহার থেকে ধরে নিয়ে ‘নিউজিল্যান্ড আপার প্যাড়াছড়া’ এলাকায় গুলি করে হত্যা করা হয়।

“দুর্বৃত্ত দিয়ে মিঠুন চাকমাকে হত্যা করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনাবাহিনী তাকে হত্যা করেছে। প্রতিবাদী কথা বললেই আপনিও আক্রান্ত হবেন।” বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল বলেন, “সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদেই মিঠুন চাকমাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মিঠুন
“মিঠুন চাকমা ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষর অধিকার আদায়ের পক্ষের একজন সোচ্চার নেতা। তাকে হত্যা করে সরকার এ আন্দোলনকে বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। মানুষকে হত্যা করে তার জীবনাবসান ঘটানো যায়, কিন্তু তার আদর্শকে ধামাচাপা দেওয়া যায় না।”
বিক্ষোভ সমাবেশে ইউনাইটেড পিপল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) ঢাকার সংগঠক প্রতীম চাকমা বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই অঘোষিত সেনা শাসন চলছে, সেটা আমরা অনেকেই জানি। জন্মগতভাবেই আমরা সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মধ্য দিয়ে বড় হচ্ছি। মিঠুনের আগে অনেককেই এখানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে খুন হতে হয়েছে। সে কারণে পাহাড় ও সমতলে আমাদের সংগঠিত হতে হবে।

“এই সরকারের বিরুদ্ধে যদি আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারি, তাহলে শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামে নয়, সারা দেশেই এ রকম অবস্থা হবে।”

মিঠুন হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা গাড়ি সেনাবাহিনী আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

“এসব থেকেই বোঝা যায়, যেদিন মিঠুনকে হত্যা করা হয়েছিল, সেদিন আসলে কার মদদে এ হত্যা করা হয়েছিল। এতে সেনাবাহিনীর উসকানির ঘটনা না থাকলে দিনে দুপুরে এ হত্যাকাণ্ড করা সম্ভব হত না।” সেনাবাহিনীর সমালোচনা করে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেন, “মিঠুন চাকমাকে সেনাবাহিনী সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করিয়েছে।

“মিঠুন হত্যার বিচার দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে হাজার হাজার মানুষকে আসতে না দিয়ে প্রশাসন কী বুঝাতে চায়? জনগণ জানতে চায় কেন সেখানে সেনাশাসন চলবে?”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ব বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী মিঠুন ২০০১ সালের দিকে ইউপিডিএফের ছাত্র সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) সভাপতি ছিলেন। তিনি এলাকায় রাজনীতির পাশাপাশি জুম্ম চাষাবাদে যুক্ত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে