রাজধানী ঢাকার মিরপুরের একটি বাসায় গ্যাস পাইপলাইন বিস্ফোরণে দগ্ধ শিশু তামিম ও তার মা মিনা বেগমের পর না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাবা মানিক মিয়াও। বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর মিরপুরে একটি পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের তিনজন দগ্ধ হন। তিনজনকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেয়া। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সাত মাসের শিশু তামিম মারা যায়। বুধবার দুপুর ২টার দিকে মারা যান তামিমের মা মিনা বেগম (২৮)।
সবশেষ তামিমের বাবাও বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) ভোরে মৃত্যুর নীল থাবার কাছে আত্মসমর্পণ করলেন। তামিমের বাবা মানিক মিয়া (৩৫) গত পরশু রাত থেকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসকরা বুধবার রাতে জানিয়েছেন, মানিক মিয়ার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
মিরপুরের ১১ নম্বর সেকশনের এ ব্লকের ৪ নম্বর রোডের পাঁচতলা বাসার নিচ তলায় থাকত মানিক ও তার পরিবার। অগ্নিকাণ্ডের খবর সংবাদ শুনে ওই পরিবারের স্বজনরা ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ছুটে যান। মিনার ভাবী শামিমা খাতুন জানান, সকালের দিকে সংবাদ পেয়ে ময়মনসিংহ থেকে মিনার মা আমিনা খাতুনসহ অন্যান্য স্বজনরা ছুটে আসেন। দুপুরে এসে তারা মিনার মৃত্যুর সংবাদ পান।
দুপুর সোয়া ২টার দিকে বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকা মিনাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল জানান, মিনার শরীরের ৮৫ শতাংশই পুড়ে যায়। পাঁচ বছর আগে মালেকের সঙ্গে মিনার বিয়ে হয়। তামিম তাদের প্রথম সন্তান। তাদের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চণ্ডীপাশা গ্রামে।
মিরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আরেফিন জানান, ধারণা করা হচ্ছে, বাসার গ্যাস পাইপলাইন লিকেজ থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দগ্ধ মানিক জানিয়েছিলেন, বাসার ভেতরেই পানির মোটর ও রিজার্ভ ট্যাংকি। রাতে মোটরের সুইচ অন করার সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরিত হয়ে বাসার ভেতর আগুন ছড়িয়ে পড়ে।