মুভি রিভিউ-“SPYDER”

0
spyder

শিভা। ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোতে কাজ করে। কি কাজ জানেন? গোপনে মানুষের কথা শোনা। বোঝেননি? দাঁড়ান বোঝাচ্ছি।
spyder
ও একটা সফটওয়্যার ডেভেলপ করেছে। সফটওয়্যার এর নাম স্পাইডার (SPYDER)। এই সফটওয়্যারে কিছু কীওয়ার্ড সেট করা আছে। ধরেন কেউ ফোনে অন্যায় কিছু করার কথা বললেই শিভার অফিসে নোটিফিকেশন চলে আসে। ধরুন আপনি কাউকে ফোনে থ্রেট দিলেন, কাউকে অশ্লীল অথবা বাজে কথা বললেন, কাউকে কিডন্যাপ করে মুক্তিপন চাইলেন এসবের নোটিফিকেশন চলে যাবে শিভার অফিসে। এরকম সবগুলো ফোনকল ওরা শুনে দেখে। সবগুলোই যে কাজের তা নয়, অনেকে অকাজেও ধমকি দেয়। এরকমভাবে অপরাধ হওয়ার আগেই অনেক অপরাধ ঠেকিয়ে দিয়েছে ওর এই সফটওয়্যার। তবে একদিন……

একদিন একটা ফোনকল সবকিছু বদলে দেয়। এক মেয়ে তার বান্ধবীকে ফোন দিয়ে বলছিল, তার বাসায় বাবা মা কেউ নেই, সে একা, সবার বাসায় বিদ্যুৎ আছে তাদেরটায় নাই, এবং তার খুব ভয় করছে, তার মনে হচ্ছে বাড়িতে অন্যকেউ আছে। এই ফোনকল শুনে শিভা ওর এক কনিস্টেবল বান্ধবীকে পাঠিয়ে দেয় ওখানে।

পরেরদিন টিভিতে ব্রেকিং নিউজ শুনে চমকে উঠে শিভা। তার ঐ বান্ধিবীসহ ঐ মেয়েটাকে কেউ কুপিয়ে হত্যা করেছে। পিস পিস করে কুপিয়ে এমনভাবে দুটা বডি মিক্স করেছে বোঝার উপায় নেই কোনটা কার শরীরের অংশ। এই ঘটনায় একদম ভেঙে পড়ে শিভা। রিজাইন দিয়ে চলে আসে বাসায়। তার বন্ধুরা মিলে তাকে বোঝায়, তার বাবা বোঝায়। আবার কাজে যোগ দেয়। বের করতে হবে এর পিছনে কে আছে। আন-অফিশিয়ালি মিশনে নামে শিভা। কেঁচো খুড়তে গিয়ে সাপ নয়, একদম ডাইনোসর বেরিয়ে আসে!!

আর কিছু বলে কাহিনী স্পয়েল করতে চাচ্ছিনা। শুধু বলব, একদম মন্ত্রমুগ্ধের মত দেখে গেছি আমি। চমকের পর চমক শুধু। নিশ্বাস নেয়ার সময়ই দিচ্ছিলনা আমাকে। এমনিতেই থ্রিলার আমার পছন্দের জনরা। তার উপর যদি সাইকো থ্রিলার হয় তাহলে তো কথাই নাই। আর এর উপর যদি টেকনো যোগ হয় তাহলে তো সোনায় সোহাগা। জ্বি, আমি এটাকে টেকনো-সাইকো-থ্রিলার হিসেবেই দেখেছি। আপনাদের ভিন্নমত হতে পারে, ব্যাপার না। ব্যাপার হল গিয়ে এর কাহিনী। একদম টুইস্টে ভরপুর।

শিভা চরিত্রে অভিনয় করেছে মহেশ বাবু। জেন্টল হিরো হিসেবে এমনিতেই ওকে আমার খুব পছন্দ। তাছাড়া ইদানিং বেছে বেছে ইউনিক কিছু মুভিতে কাজ করছে এর আগে

নায়িকা হিসেবে আছে রাকুল প্রিত। স্ক্রিনে যতক্ষণ ছিল ভালো লেগেছে, যদিও মুভিতে ওর তেমন একটা দরকার ছিল না। এই মুভি নায়িকা ছাড়াও হিট হত। এসব মুভিতে আসলে নায়িকা লাগেনা।

ভিলেন চরিত্রর যে অভিনয় করেছে আমি তার নাম জানিনা। তবে সে গুণী অভিনেতা। মার্শালেও তার অভিনয় আমার নজর কেড়েছে। যেমন অভিনয় তেমনই বডি ল্যাঙ্গুয়েজ।

মুভির গ্রাফিক্স চমৎকার ছিল। ভাল ছিল ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরও। ইভেন গানগুলাও সুন্দর ছিল। আমি সাধারণত সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি দেখার সময় গান দেখিনা, টেনে দিই। এবার যে কোন দিক দিয়ে গান চলে গেল, টেনে দেয়ার কথা মনেই ছিল না।

আপনি যদি থ্রিলার, সাইকো থ্রিলার, টেকনো থ্রিলারের ফ্যান হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য পাড়ড়ফেক্ট একটা প্যাকেজ হল স্পাইডার। আর যারা মহেশ বাবুর ফ্যান তারা নিশ্চয় অলরেডি দেখে ফেলেছেন। যারা এখনো দেখেননি তাড়াতাড়ি শুরু করুন। হ্যাপ্পি ওয়াচিং।

লেখকঃ মাসুম আহমেদ আদি

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে