আব্দুল রহিম, আফগান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ছিলেন। ২০১২ সালে কান্দাহারে মাটিতে পুঁতে রাখা মাইন নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে নিজের দুইটি হাতই হারান তিনি। রহিম চিকিৎসা নিতে আসেন ভারতের কোচির অমৃতা ইনস্টিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস হাসপাতালে।
ঘটনাক্রমে ২ বছর পরে জোসেফ নামের কোচির এক নির্মাণ শ্রমিক মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় মারা যান। মৃত্যুর আগে জোসেফ তার কিডনি ও লিভার দান করে যান। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসক জানান তাদের একজন রোগী আছেন যে দুইটি হাত হারিয়েছেন, যদি জোসেফের হাত দুটোও দান করা হয় তাহলে সেই রোগীর শরীরে লাগিয়ে দেয়া সম্ভব। জোসেফ এর স্ত্রী এতে সম্মতি দিলে জোসেফের দুই হাত সংগ্রহ করা হয় আব্দুল রহিমের শরীরে প্রতিস্থাপনের উদ্দেশ্যে।
ভারতের কোচির অমৃতা ইনস্টিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস এ ডাক্তার সুব্রমানিয়াম আয়ার এর তত্ত্বাবধানে ১৫ ঘন্টার দীর্ঘ সার্জারীর মাধ্যমে হাত দুটি লাগানো হয় আব্দুল রহিমের শরীরে। সার্জারিতে সর্বমোট খরচ হয় ১৫ লক্ষ টাকা, যার পুরোটাই দিয়েছে আফগান সরকার।
আব্দুল রহিমের শরীরে মৃত স্বামীর হাত দুটি দেখে কান্না আটকে রাখতে পারেন নি জোসেফের স্ত্রী! এ অশ্রু কি শুধু স্বামী হারানোর শোকের? অবশ্যই না। এ অশ্রু গর্বের! এ অশ্রু মানুষের উপকার করার আনন্দের!
শরীরের রঙের সাথে হাতের রঙের পার্থক্য থাকলে সে নিয়ে চিন্তিত নন ৩২বছর বয়সী সাবেক সেনা কর্মকর্তা আব্দুল রহিম। তিনি বলেন- “কিছুদিন আগেও আমার একটা হাতও ছিল না! এখন দুটো হাত আছে। এখন আমি নিজে খেতে পারি, পানি পান করতে পারি, জামা কাপড় পড়তে পারি, লিখতে পারি। বাচ্চাকে আদর করতে পারি! এ বড় আনন্দের!”
এভাবেই ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে জয় হয় মানবতার!