রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পাঁচ বছর, আগ্রগতি নেই বিচারের

0
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি

দেশের পোশাক শিল্পের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ শিল্প দুর্ঘটনা রানা প্লাজা ধসের পাঁচ বছর আজ। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে রানা প্লাজার সামনে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে নিহতদের শ্রদ্ধা জানান। এসময় নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরাও শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

২০১৩ সালের এই দিনে ঢাকার অদূরে সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ৯ তলা ভবন রানা প্লাজা ধসে পড়ে। নিমিষেই থেমে যায় শত শত শ্রমিকের জীবনের কোলাহল। মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয় রানা প্লাজা।

নিহত হন এক হাজার ১৩৫ জন শ্রমিক। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার সীমানা পেরিয়ে গোটা দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষের চোখ ভিজে ওঠে। বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমের শিরোনাম হয় ‘বাংলাদেশ’। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয় এক হাজার ১১৬ জনের মরদেহ। বাকিরা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। জীবিত উদ্ধার করা হয় দুই হাজার ৪৩৮ জনকে। ১০৫ জনের মরদেহ আজ পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি। এখনও স্বজনকে খুঁজে ফিরছেন শোকার্ত মানুষ।

ভবন ধসের পর টানা ২০ দিন চলে উদ্ধার অভিযান। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে অভিযানে যোগ দেয় হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। স্বতঃফূর্তভাবে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়ে তারা আবারও প্রমাণ করে- ‘মানুষ মানুষের জন্য’। চিকিৎসকরাও বিরামহীন সেবায় নিয়োজিত ছিলেন।

রানা প্লাজায় স্ত্রী হারিয়েছেন স্বামীকে। স্বামী হারিয়েছেন প্রিয়তমা স্ত্রীকে। ভাইকে ফেরত না পাওয়ার বেদনায় কাতর বোন। বোনের লাশের প্রতীক্ষায় ভাই। সন্তানের মৃত্যুশোকে ব্যাকুল মা-বাবা। ছোট্ট অবুঝ শিশুর কণ্ঠে ‘মা-বাবার’ ডাক। তবে মা-বাবার স্নেহের বন্ধন ছিন্ন হওয়া শিশুরা এখনও জানে না, কী অমূল্য সম্পদ তারা হারিয়েছে। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে ছিন্নভিন্ন হয়েছে একেকটি সংসার। টানাপড়নের এসব সংসারে কমতি ছিল না সুখের। আহত শ্রমিকের কেউ কেউ আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। শোক ভুলে শুরু করেছেন নতুন জীবন। আবার দুঃসহ সেই বেদনাকে ভুলতে পারেননি অনেকে। চোখে অশ্রু তার হৃদয়ে স্বজনহারা বেদনার ভার নিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।