রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র মুখোমুখি অবস্থানে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগুচ্ছে পৃথিবী

0
ট্রাম্প-পুতিন

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বৃহৎ শক্তিগুলো পরস্পরকে নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে। বিশেষ করে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অস্থিরতা ক্রমশই জোরালো হচ্ছে। এ যুদ্ধে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়েছে রাশিয়া।অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট আসাদ বিরোধীদের নানাভাবে সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।
ট্রাম্প-পুতিন
সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করার জন্য সিরিয়াকে কড়া জবাব দেয়া হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সর্বশেষ এই টুইটে বলেছেন ‘রাশিয়া প্রস্তুত হও’ – কারণ যে মিসাইল আসবে আসবে তা হবে ‘সুন্দর, নতুন এবং বুদ্ধিমান।’ এমন প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন হচ্ছে – পৃথিবী কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে?

মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক লিনা খাতিব বলছেন সিরিয়ার সংঘাত এরই মধ্যে বৈশ্বিক রূপ লাভ করেছে। অন্যদিকে আমেরিকার কাছে উত্তর কোরিয়াও একটি বড় মাথা ব্যাথার কারণ। লন্ডনের স্কুল অব আফ্রিকান এন্ড ওরিয়েন্টাল স্টাডিজের গবেষক স্টিভ স্যাং মনে করেন উত্তর কোরিয়া পারমানবিক সক্ষমতা অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।

মস্কোর ইন্সটিটিউট অব পলিটিকাল স্টাডিজ-এর গবেষক সার্গেই ম্যারকভ মনে বলছেন, পশ্চিমা নেতারা নিজেদের রাশিয়ার চেয়ে শক্তিশালী মনে করে। পৃথিবীতে এখন নানা ধরনের দ্বন্দ্ব কিংবা সংঘাত চলছে এবং এর সাথে নানা দেশ জড়িত।

মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক লিনা খাতিব বলছেন এক ধরনের শীতল যুদ্ধ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এর সাথে আরো একটি বিষয় যুক্ত হয়েছে। সেটি হচ্ছে, পৃথিবীর বৃহৎ শক্তিধর দেশগুলো এখন যারা পরিচালনা করছে তারা সবাই জাতীয়তাবাদী।সেজন্য যে কোন সংকটের ক্ষেত্রে তারা পিছ পা হতে চাইছেন না। একথা মনে করেন দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক শশাঙ্ক জোসি।

এমন প্রেক্ষাপটে উদ্বিগ্ন হবার মতো পরিস্থিতি কি রয়েছে? মস্কোর ইন্সটিটিউট অব পলিটিকাল স্টাডিজ-এর গবেষক সার্গেই ম্যারকভ মনে করেন, যদি রাশিয়ার কোন সৈন্যকে আমেরিকা হত্যা করে তাহলে কেবল উদ্বিগ্ন হবার মতো পরিস্থিতি আসতে পারে। লিনা খাতিব মনে করেন, যদি বৃহৎ শক্তিগুলোর পরস্পরের মাঝে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায় এবং পরস্পরের স্যাটেলাইটে সাইবার আক্রমণ করে তাহলে উদ্বিগ্ন হবার মতো কারণ থাকতে পারে।

লন্ডনের স্কুল অব আফ্রিকান এন্ড ওরিয়েন্টাল স্টাডিজের গবেষক স্টিভ স্যাং-এর মতে কোরিয়া উপদ্বীপ থেকে আমেরিকা যদি তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয় তাহলে সেটা হবে খুবই ভয়ঙ্কর একটি বার্তা। এর অর্থ হচ্ছে সে অঞ্চলে একটি যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

যদিও উত্তেজনা বাড়ছে কিন্তু একই সাথে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে অনেকেই কাজ করছেন। পৃথিবীজুড়ে যেসব শান্তিকামী নাগরিক সমাজ আছে তারা সরকারগুলোর উপর চাপ তৈরি করছে যাতে তারা সংঘাতে না জড়িয়ে পড়ে। শশাঙ্ক জোসির মতে জাতিসংঘ এবং অন্যন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর এক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। যে কোন ধরনের বড় যুদ্ধ থামানোর জন্য জাতিসংঘ একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে বলে জোসি মনে করেন।