লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভায় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচয় দিয়ে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রতারক চক্র। এরই মধ্যে কল করে তারা পৌরসভার দুজন কাউন্সিলরের কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে ৫৭ হাজার টাকা নিয়ে যায়। গত তিনদিনের এমন ঘটনা জানাজানি হলে পৌরসভার অন্যরা সতর্ক হয়ে যান।
শনিবার বিকেলে রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট জানান, প্রতারকরা তিনদিন ধরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা দেবে বলে তালিকা চাচ্ছিল। তারা আমাকেও ১৫০ জনের সহায়তা দেওয়ার টোপ দেয়। এরই মধ্যে কাউন্সিলর খায়রুল আলম রুবেল প্রধানিয়ার কাছ থেকে ৫২ হাজার টাকা ও মাহবুবুর রহমান রিজভীর কাছে থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে গেছে প্রতারক চক্র।
তিনি জানান, এর আগেও একই কায়দায় প্রতারক চক্র উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মারুফ বিন জাকারিয়ার কাছ থেকে দুই লাখ ও বামনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামছুল হুদার কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা নিয়ে যায়। অতিরিক্ত খাদ্য সহায়তা দেওয়ার নামে মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে এসব টাকা নিয়েছে তারা।
পৌরসভার চারজন কাউন্সিলর বলেন, তাদের লক্ষ্মীপুর রেড ক্রিসেন্ট কার্যালয়ের কর্মকর্তা আরিফ পরিচয় দিয়ে কল করে জানানো হয়, প্রতি কাউন্সিলরের কাছে ১০ জন গরিবের জন্য খাদ্য সহায়তা হিসেবে ৩০ কেজি চাল, ৫ কেজি ডাল, ৫ লিটার তেল ও ৪ হাজার ২০০ টাকা করে দেওয়া হবে। তাদের (কাউন্সিলর) তালিকা পাঠাতে বলেন। এবং পরবর্তীতে আবার ফোন করে জানানো হয়, অতিরিক্ত বরাদ্দও আছে কেউ চাইলে ফরম বাবদ ৩২০ টাকা করে বিকাশে পাঠিয়ে নিতে পারবেন। এভাবে দুজনের কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পৌর প্যানেল মেয়র-২ মেহেদী হাসান শিশির পাঠান সাংবাদিকদের জানান, রেড ক্রিসেন্টের খাদ্য সহায়তা ও টাকা দেওয়ার কথা বলে তাকে চার-পাঁচবার ফোন করে তালিকা দিতে বলা হয়। অতিরিক্ত বরাদ্দের জন্য ৩৫ হাজার টাকা বিকাশে পাঠাতে বলে। বিষয়টি ভুয়া নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি কোন টাকা পাঠাননি। এখন তাদের মোবাইল ফোন নম্বর দুটি বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে আরোও জানতে চাওয়া হলে লক্ষ্মীপুর জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান জানান, এমন প্রতারণার কথা শুনেছেন তিনি। রেড ক্রিসেন্ট জনগণকে বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা ও সুরক্ষাসামগ্রী দিয়ে এসেছে। সুনাম ক্ষুণ্ন করতে প্রতারকরা প্রতিষ্ঠানটির নাম ব্যবহার করছে আর এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।