ল্যাবএইডে ২৫ টাকার ইনজেকশন ৬০ টাকা

0
ল্যাবএইডে ২৫ টাকার ইনজেকশন ৬০ টাকা

ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের ফার্মেসিতে সোডিব ইনজেকশনের দাম প্রায় আড়াইগুণ বেশি। এ জন্য তাদের এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।

জানা যায়, ল্যাবএইড হাসপাতালে সম্প্রতি ভর্তি একজন মুমূর্ষু রোগীর জন্য জেসন ফার্মা লিমিটেডের সোডিব (২৫ মিলি) ইনজেকশনটি কেনার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। ওই রোগীর স্বজন ল্যাবএইডের ফার্মেসিতে গেলে সোডিবের দাম ৬০ টাকা রাখা হয়। অথচ ইনজেকশনের গায়ে ২৫ টাকা লেখা ছিল। দাম বেশি রাখার কারণ জানতে চাইলে ফার্মেসির দায়িত্বরত কর্মী জানান- ওষুধের সরবরাহ নেই। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। মোড়কে যাই লেখা থাকুক দাম ৬০ টাকা নিলে নেন, না হলে অন্যকোথাও থেকে আনেন। এরপরই অধিদফতরে অভিযোগ করেন ওই রোগীর স্বজন।

আজ বৃহস্পতিবার কারওয়ান বাজারে অধিদফতরের কার্যালয়ে অভিযোগকারী ভোক্তা ও ল্যাবএইড কর্তৃৃৃপক্ষের শুনানি হয়। এতে ল্যাবএইডের অনিয়ম প্রমাণিত হয়। তাই ভোক্তা অধিকার আইনের দুই ধারায় সর্বোচ্চ অর্থদণ্ড অর্থাৎ এক লাখ টাকার জরিমানা করা হয়েছে ল্যাবএইডকে।

এইদিকে অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহনাজ সুলতানা বলেন, সম্রাট নামের একজন ভুক্তভোগী ল্যাবএইডের বিরুদ্ধে ওষুধের দাম বেশি রাখার অভিযোগ করেন। বিষয়টি অধিদফতরে অভিযোগ শুনানিতে প্রমাণ হওয়ায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০ ও ৪৫ ধারায় ৫০ হাজার টাকা করে মোট এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৪০ ধারায় বলা আছে, ‘কোনো ব্যক্তি কোনো আইন বা বিধির অধীন নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে কোনো পণ্য, ওষুধ বা সেবা বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করিলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’

আর ৪৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি প্রদত্ত মূল্যের বিনিময়ে প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করিলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’

তিনি আরও বলেন, ল্যাবএইড একটি সনামধন্য চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ওপর মানুষের রয়েছে আস্থা ও বিশ্বাস। সেই সরলতাকে পুঁজি করে তারা সাধারণ মানুষকে ঠকাচ্ছে। ওষুধের মোড়কে ২৫ টাকা দাম লেখা থাকা সত্ত্বেও ক্রেতার কাছে তারা রাখছে ৬০ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির দাবি ওষধ সরবারহ কম থাকায় তারা বেশি দাম রেখেছে। কিন্তু তাদের কম্পিউটারে মূল্য নির্ধারণ ছিল ৬০ টাকা। অর্থাৎ তারা পরিকল্পিতভাবে ভোক্তার কাছ থেকে বেশি দাম নিচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ল্যাবএইড হাসপাতালের কর্পোরেট কমিউনিকেশন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার সাইফুর রহমান লেলিন বলেন, এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি। বাজারে ওষুধটির সরবরাহ কম ছিল। আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়। তাই ক্রেতার কাছ থেকে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি রাখা হয়।