সন্দেহ এড়াতে সড়ক অবরোধ-মানববন্ধনে অংশ নেয় খুনী কামরুল

0
পরকীয়া

রংপুরের আইনজীবী রথীশচন্দ্র ভৌমিক বাবুসোনা হত্যাকাণ্ডে ‘নিখুঁত’ পরিকল্পনাও ফলপ্রসূ হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে খুনের পরিকল্পনা এবং খুন শেষে সন্দেহ এড়াতে মানববন্ধন-সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েও আড়াল হতে পারেননি পরকীয়া প্রেমিক কামরুল ইসলাম। প্রত্যাক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নিখোঁজের পর বাবুসোনাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারের দাবিতে তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শনিবার দুপুরে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের আয়োজন করা হয়। এদিকে খুনের ঘটনায় কেউ যেন তাকে সন্দেহ করতে না পারে সেজন্য কামরুল সেই মানববন্ধনে অংশ নেন।
পরকীয়া
জানা যায়, বাবুসোনাকে হত্যার জন্য অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ছক কষেছিলেন তার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপা ভৌমিক ও পরকীয়া প্রেমিক কামরুল ইসলাম। কামরুল ইসলাম মরদেহ গুম করার স্থান হিসেবে বেছে নেন তার বড় ভাই ঢাকায় বসবাসরত খাদেমুল ইসলামের নির্মাণাধীন বাড়ি। ওই বাড়িতেই মরদেহ গুম করার সিদ্ধান্ত হিসেবে ভিন্ন কথা বলে স্কুলের দুইজন ছাত্রকে দিয়ে গর্ত খুঁড়িয়ে নেন। এছাড়াও সেখানে তিনি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কোচিং ক্লাস করাবেন বলেও ছাত্রছাত্রীদের জানান।

তাদের ধারণা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই কামরুল ওই বাড়িটি সংস্কারের নামে সেখানে মেঝে প্লাস্টার করে নিতেন এবং কেউ যাতে বুঝতে না পারে সেজন্য কোচিং ক্লাস শুরু করে দিতেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ওসি বাবুল মিঞা বলেন, এটি একটি স্পর্শকাতর মামলা। এ ঘটনায় দীপা ও কামরুলসহ প্রথমে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রথীশের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) মিলন মহন্তকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। সেগুলো আমরা যাচাই বাছাই করে দেখছি। যেসব তথ্য পেয়েছি তা তদন্তের স্বার্থে সাংবাদিকদের বলছি না।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল আমীন জানান, মিলন মহন্ত (৩০) ব্যক্তিগত সহকারী হওয়ায় তিনি রথীশচন্দ্রের বাড়িতে সব সময় যাতায়াত করতেন। তার বাড়িতে মাঝে মধ্যে থাকতেন। রথীশের স্ত্রীর সঙ্গে সদ্ভাব ছিল। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তিনি জানেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। হত্যাকাণ্ডের দিন মিলন মহন্ত রথীশের বাড়ির বাইরে নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন।

এদিকে, রথীশচন্দ্র হত্যার ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীতে শোকর‌্যালি করেছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদ। এ ছাড়া রংপুর আইনজীবী সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন দিনের শোক পালন করছেন আইনজীবীরা।

উল্লেখ্য, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) রাত ১০টার দিকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বাবুসোনাকে হত্যা করেন দীপা ও তার সহকর্মী পরকীয়া প্রেমিক তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল ইসলাম।