সাড়ে তিন দশক পর সৌদি আরবের হলে চালু হচ্ছে সিনেমা হল, প্রথম প্রদর্শিত হবে মারভেলের সুপারহিরো ‘ব্ল্যাক প্যানথার’

0
সিনেমা হল

সৌদি আরবে প্রথম সিনেমা প্রদর্শিত হবে মারভেলের সুপারহিরো ‘ব্ল্যাক প্যানথার’। সাড়ে তিন দশক পর সৌদি আরবের মানুষ আবার ১৮ই এপ্রিল থেকে এই অ্যাকশন মুভির মাধ্যমে হলে গিয়ে সিনেমা দেখতে শুরু করবেন। সৌদি তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিনেমা প্রদর্শন শুরুর তারিখসহ এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সিনেমা হল
রাজধানী রিয়াদের কিং আবদুল্লাহ ফিন্যান্সিয়াল জেলায় গানের কনর্সাটের জন্য বানানো একটি হলে প্রথম এই সিনেমা প্রদর্শন করা হবে। এই হলে পাঁচশটি আসন থাকবে। এবার গ্রীষ্মেই আরও তিনটি পর্দা যুক্ত হবে।

সৌদি আরব সিনেমা বা বিনোদন উন্মুক্ত করে রক্ষণশীল সমাজ থেকে যে বেরিয়ে আসতে চাইছে, তাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। কিন্তু দেশটিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সূচনা হবে কিনা, তা নিয়ে বিশ্লেষকদের প্রশ্ন রয়েছে।

সৌদি আরবের প্রধান আর্থিক তহবিল পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড সিনেমা প্রদর্শনের জন্য বিশ্বের সবচাইতে বড় সিনেমা হল চেইন আমেরিকান মুভি ক্লাসিক বা এএমসির সাথে চুক্ত সই করেছে।

এই চুক্তি অনুযায়ী, দুই পক্ষ আগামী পাঁচ বছরে সৌদি আরবের ১৫টি শহরে ৪০টি সিনেমা হল বা প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ করবে। এর পরের সাত বছরে ২৫টি শহরে ৫০ থেকে একশটি সিনেমা হল নির্মাণ করবে।

সৌদি আরবের মানুষ সর্বশেষ সিনেমা দেখেছিলেন ১৯৭০ সালে। সে সময় দেশটির কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতাদের চাপে সিনেমা হলগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। ৩৫ বছরর ধরে সেখানে কোন সিনেমা হল ছিল না। সৌদি আরবের ক্ষমতাসীন বাদশাহ পরিবার কট্টরপন্থী ওয়াহাবী মতবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল। যে মতবাদে নারী-পুরুষের পোশাকসহ অনেক আচার কঠোরভাবে পালন করতে হয়।

এখন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দেশটিতে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করেছেন। তিনি সৌদি আরবকে রক্ষণশীল সমাজ থেকে বের করে আনতে চাইছেন বলে বলা হচ্ছে।

তবে সৌদি জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী। তারা অনেক আগে থেকেই স্যাটেলাইট টেলিভিশন, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্নভাবে পশ্চিমা অনুষ্ঠান দেখে থাকেন। এখন অ্যাকশন মুভি ব্ল্যাক প্যানথার দিয়ে সেখানে প্রকাশ্যে পশ্চিমা সিনেমা দেখা শুরু হচ্ছে।

সৌদিআরবে কি মত প্রকাশের স্বাধীনতার সূচনা হবে কিনা? সৌদি আরবে হলিউডের সিনেমা প্রদর্শন শুরু হলেও কিছু সেন্সর করা হতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। তবে সিনেমা দেখানো শুরু হলেই অথবা নারীরা গাড়ি চালাতে পারলেই, সেখানেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সূচনা হবে, এমনটা মনে করছেন না বিশ্লেষকরা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, বাদশাহর পরিবার নিয়ে সমালোচনা করা যাবে না, সেই দেশটির আইনেই বলা আছে।