সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস করেও ধরা পড়ে না কেউ

0
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস করেও ধরা পড়ে না কেউ

পিইসি শেষ পরীক্ষা গণিতেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। আগেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গণিত প্রশ্নের সঙ্গে গতকাল রবিবার অনুষ্ঠিত মূল পরীক্ষার প্রশ্নের প্রায় হুবহু মিল পাওয়া গেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস করেও ধরা পড়ে না কেউ

ফেসবুকে প্রশ্ন বিক্রি করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন।

এর আগে প্রতিটি পরীক্ষার আগের রাতে ও পরীক্ষার দিন সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশেষ করে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও ব্যক্তিগত নামে খোলা আইডি থেকে এই প্রশ্ন দেওয়া হয়। কালের কণ্ঠ’র অনুসন্ধানে বেশ কয়েকটি পেজ, আইডি ও মোবাইল ফোন নম্বর শনাক্ত করা গেছে, যেখানে পরীক্ষার প্রশ্ন দেওয়ার পাশাপাশি ফলাফল বদলে দেওয়ার ‘কাজ করা হয়’ বলেও ঘোষণা আছে।

গত শুক্রবার এ নিয়ে কালের কণ্ঠে বিস্তারিত প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। তখন প্রশাসনসহ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেবেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে গতকাল পিইসি পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলেও এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন বা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কোনো তত্পরতা লক্ষ করা যায়নি। ব্যক্তি উদ্যোগে প্রশ্ন ফাঁসকারী শনাক্ত করে দেওয়া ও থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার তথ্যও পাওয়া গেছে। এর পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

গত বৃহস্পতিবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামালের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, ‘সুনির্দিষ্টভাবে প্রশ্ন ফাঁসের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।

’ গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় ফোন করলে তিনি একটা মিটিংয়ে আছেন বলে জানিয়ে পরে ফোন দিতে বলেন। কিন্তু রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত কয়েকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।

পরীক্ষায় জালিয়াতি এবং সাইবার অপরাধ নিয়ে কাজ করেন এমন তিনজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গেও কথা হয় কালের কণ্ঠ’র। তাঁদের মধ্যে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ নাজমুল আলম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষায় জালিয়াতি প্রতিরোধে গঠিত মনিটরিং কমিটির সদস্য। তিনি বলেছিলেন, তাঁরা মাধ্যমিক বা উচ্চতর পর্যায়ে এ ধরনের জালিয়াতি প্রতিরোধে কাজ করেন। প্রাথমিক পরীক্ষার ব্যাপারে তাঁদের কোনো

তত্পরতা নেই। কারণ প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কখনো তাঁদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। এমনকি ব্যক্তি উদ্যোগে কোনো অভিযোগও তাঁরা পাননি।

একই রকম তথ্য জানান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্লা নজরুল ইসলাম এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের উপকমিশনার (ডিসি) মো. আলিমুজ্জামান।

তবে গতকাল ‘ফুড সেফটি অথরিটি’র যুগ্ম সচিব মাহবুব কবির মিলন তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, তিনি নিজে একটি ফেসবুক পেজে প্রশ্ন ফাঁসকারীকে শনাক্ত করে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে প্রশ্ন বিক্রি চলছে। অথচ কোনো প্রতিকার নেই। তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, প্রকাশনার আইনসহ অনেক আইনে এর প্রতিকার করা যায়। বিষয়টি এখন এমন হয়ে গেছে যে এটি কোনো অপরাধই না। ’

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে