সিলেটের গোয়াইনঘাটে সেই অবিবাহিত যুবক মইনুল খুনের মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন দুবাই প্রবাসীর স্ত্রী সাফিয়া খাতুন। তিনি জবানবন্দিতে দাবি করেছেন, ঘটনার রাতে মইনুল ঘরের বেড়া ভেঙে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তিনি আত্মরক্ষার্থে দা দিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। পরে কাড়াকাড়ির এক পর্যায়ে দা গলায় লেগে মইনুল মারা যায়।
এ হত্যা মামলায় সাফিয়াসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করা হলেও সাফিয়া জবানবন্দিতে জানান, ঘটনার সময় তার সঙ্গে আর কেউ ছিল না। এটা কোনো পরিকল্পিত হত্যাকান্ডও ছিল না। এ সময় সিলেটের আমল গ্রহণকারী দশম আদালতের বিচারক আসমা জাহান সাফিয়ার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি (তদন্ত) দিলীপ কান্ত নাথ পুরো ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন। তাঁর ভাষ্যমতে, আদালতে সাফিয়া বলেন, মইনুল তাকে প্রায়ই উত্যক্ত করত। বেশ কয়েকবার সম্ভ্রমহানিরও চেষ্টা করেছিল। বিষয়টি নিয়ে সাফিয়া মইনুল ইসলামের পরিবার ও গ্রামবাসীকে একাধিকবার অবহিত করলেও এর কোনো সুরাহা হয়নি। এমনকি এক পর্যায়ে মইনুলের ভয়ে রাতে প্রাকৃতিক কাজ সম্পাদন করতে ঘরের বাইরে বের হতে পারতেন না তিনি। ফলে বসতঘরে একটি বালতিতে প্রাকৃতিক কাজ সারতে হতো সাফিয়াকে।
তার ভয়ে সাফিয়া সব সময় একটি দা বালিশের পাশে রেখে ঘুমাতেন। প্রতিদিনের মতো গত বুধবার রাতেও বালিশের পাশে দা নিয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়লে হঠাৎ রাত ১১টার দিকে ঘরের বেড়া ভেঙে মইনুল বসতঘরে প্রবেশ করেছে টের পান। উপায়ন্তর না দেখে বালিশের পাশে থাকা দা হাতে নিয়ে তিনি মইনুলকে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। কিন্তু ঘর থেকে বের হওয়ার বদলে মইনুল সাফিয়ার হাত থেকে দা কেড়ে নিতে যান এবং সাফিয়াকে আঘাতের চেষ্টা করেন। পরে দা নিয়ে উভয়ের কাড়াকাড়ির এক পর্যায়ে মইনুলের ঘাড়ে আঘাত লাগে।
এদিকে নিহত মইনুলের ভাই খসরুলের দায়ের করা হত্যা মামলায় সাফিয়া বেগমসহ মোট ৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। খুন হওয়া মইনুল টুকইর (যথনাথা) গ্রামের মৃত রহমত আলীর ছেলে ছিলেন। প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে নিউজ ইনসাইড ২৪ এ একটি খবর প্রকাশিত হয়।