সিলেটে সোমবার এক মিনিটের ব্যবধানে দুবার ভূমিকম্পের পর নগরীর রাজা গিরিশচন্দ্র (জিসি) স্কুল ভবনের বড় ফাটল দেখা দিয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ২৯ ও ৩০ মিনিটে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর বন্দরবাজার এলাকার ওই স্কুল ভবনে ফাটল দেখতে পান স্থানীয়রা।
এদিকে পরপর দুবার ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ায় সিলেটের মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ সময় মানুষ দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। অনেকেই বাসাবাড়ি ও অফিস থেকে বেরিয়ে রাস্তায় ভিড় করেন।
রাজা জিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুমিন জানান, সন্ধ্যার ভূমিকম্পের পর বিদ্যালয়ের দ্বিতল ‘বদরউদ্দিন কামরান’ ভবনের বিভিন্ন কক্ষের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় পলেস্তারা খসে পড়েছে। ভবন কিছুটা হেলেও পড়েছে।
বিদ্যালয় খোলার আগেই তিনি এ ভবন সংস্কারের দাবি জানান।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী রাতেই বিদ্যালয় ভবনটি পরিদর্শন করেছেন।
তিনি বলেন, ওই ভবনের বেশ কিছু স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ মনে হচ্ছে। এখানে আবেগের কোনো স্থান নেই। ঝুঁকিপূর্ণ সব ভবন ভাঙ্গার উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান মেয়র আরিফুল।
ওই স্কুলভবনটি সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের নামে নির্মিত। ২০০৬ সালে এই ভবন নির্মিত হয়। ২০১৭ সালের দিকে ভবনের দ্বিতীয় তলার কাজ সম্পন্ন হয়।
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ রাজা জিসি উচ্চ বিদ্যালয়। শতবর্ষি এই বিদ্যালয়ে ১৮৮৬ সালে নির্মাণ করেন প্রখ্যাত দানশীল ও শিক্ষানুরাগী রাজা গিরিশ চন্দ্র।
বাংলাদেশ ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, এই কম্পনগুলোও পূর্বের ভূ-কম্পনের মতো শুধু সিলেট সেন্টারে পরিলক্ষিত হয়েছে।
ডাটা বিশ্লেষণ শেষে তিনি জানান, ভূমিকম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩.৮ এবং এর উৎপত্তিস্থল সিলেট শহর থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে।
এর আগে ২৯ ও ৩০ মে সাত দফা ভূ-কম্পন অনুভূত হয় সিলেটে। এর পর বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ ২২টি ভবন থেকে নাগরিকদের ১০ দিনের জন্য সরে যেতে নির্দেশ দেয় সিলেট সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে ছয়টি বিপণিবিতান এখনো বন্ধ রয়েছে।