সিলেটে বেড়ে চলেছে ডেঙ্গুর শঙ্কা। ইতোমধ্যে নগরীর ১১টি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে তারা রাজধানী হতে এসেছেন। ডেঙ্গুর প্রকোপ নিরসনে নিয়মিত তৎপরতা শুরু করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। বাসাবাড়ি থেকে খোলা জায়গা পর্যন্ত সর্বত্র চলছে সিসিকের অভিযান।
সিসিক এর তথ্যমতে, গত ১১ জুলাই নগরীর দক্ষিণ সুরমা এলাকায় ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভার্থখলা ও কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে কয়েক জায়গায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এরপর বেশ কিছু দিন অভিযান স্থগিত থাকে। সম্প্রতি আবারও শুরু হয়েছে এর প্রকোপ। এই পর্যন্ত মোট ১১টি স্থানে মিলেছে এডিস মশার লার্ভা। বৃহস্পতিবার তিনটি স্থান চিহ্নিত করে ধ্বংস করা হয়েছে লার্ভা। তিনটি স্থানের মধ্যে রয়েছে, হাওয়াপাড়াস্থ সিলসিলা নার্সারি, লামাবাজারের হাবিব টাওয়ারের গ্যারেজ ও সিলভ্যালী টাওয়ারের গ্যারেজ।
ইইতোপূর্বে সুবিদবাজারের একটি দোকান, পাঠানটুলার একটি বাড়ি, দক্ষিণ সুরমায় কিনব্রিজের সামনে দুটি দোকানসহ মোট আটটি স্থানে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়।
সিসিকের নিজেদের বিভিন্ন স্থাপনায়ও পানি জমে মশা তৈরির প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে। এরকম দেখা গেছে নগরের নাইওরপুল পয়েন্টে তৈরি করা ‘মিশন চত্বর ফোয়ারা’সহ আরো স্থানে। নাইওরপুলের এক ব্যবসায়ী গণমাধ্যমকে জানান, ফোয়ারাটি অযত্নে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানি আটকে থাকে সবসময়। রোদ হলেও ফোয়ারায় পানি জমে থাকতে দেখা যায়। এখানে এডিসের লার্ভা মিলতে পারে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, হুমায়ন চত্বর ও মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে পানি জমে থাকায় সেখানে পরীক্ষা চালালেও লার্ভার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এডিসের উৎপত্তিস্থল সাধারণত বেশি পানিতে হয় না। তবুও নাইওরপুলের ফোয়ারায় অভিযান চালানো হবে। প্রতিদিন অভিযান চালানো হচ্ছে এমন কথা জানিয়ে তিনি বলেন,প্রতি সপ্তাহে তিন দিন অভিযান চালানো হয়। যেখানে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায় পরবর্তীতে সেগুলো ধ্বংস করা হয়। ডা. জাহিদুল ইসলাম আরও জানান, সাধারণত বাসার ফুলের টব, ডাবের খোসা, টায়ারের দোকানসহ পরিত্যক্ত জায়গায় জমে থাকা পানিতে এডিস মশার লার্ভা জন্ম নেয়।
ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় নগরীর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, সিলেটে ইতোমধ্যে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। ওই ব্যক্তি ঢাকার একটি হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে আছেন। সেখান থেকে তিনি সংক্রমিত হয়ে সিলেটে আসেন। পরে তাকে আইসোলেশনে রাখা হয় এবং সুস্থ হওয়ার পর ঢাকায় ফিরে যান।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ বিশ্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, সিলেটে দুজনের শরীরে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ যেন না বাড়ে সেজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ অব্যাহত রেখেছে।
তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা, জরিমানা করা হয়: দক্ষিণ সুরমার ক্বীন ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় খোলা আকাশের নিচে স্যানেটারি পণ্যের পসরায় ডেঙ্গি মশার লার্ভার সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সিসিকের ভ্রাম্যমাণ আদালত মামলা ও জরিমানা করেছেন। সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায় বৃহস্পতিবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। সিসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের একটি দল সেখানে উপস্থিত ছিল।
অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বেআইনিভাবে খোলা আকাশের নিচে স্যানেটারি পণ্যের পসরা সাজিয়ে রাখার জন্য তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেন এবং পাঁচ হাজার টাকা করে মোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া খোলা স্থান থেকে ১ সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গু মশার উৎসস্থল ধ্বংসে এসব স্যানেটারি পণ্য সরিয়ে নিতে সময় ধার্য করে দেন। এ
তাছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত নগরীর মেন্দিভাগ এলাকার ‘ঈশিতা রেস্টুরেন্টে’ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার বিক্রির জন্য ভোক্তা অধিকার আইনে মামলা ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।














