হাত বিচ্ছিন্ন বাস শ্রমিকের ত্রাণকর্তা কলেজছাত্রী

0
হাত বিচ্ছিন্ন বাস শ্রমিক

চোখের সামনে এতো বড় মর্মান্তিক ঘটনা দেখে নিজেকে আর সামলে রাখতে পারেন নি। গোপালগঞ্জে বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে হাত বিচ্ছিন্ন বাস শ্রমিক হৃদয় মিনার ত্রাণকর্তা হিসেবে প্রথমে এগিয়ে আসেন ঢাকা ইডেন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী রাহিমা মনি। রাহিমা মনি ওই বাস শ্রমিককে উদ্ধার করে প্রথমে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকা পাঠানো হয়।
হাত বিচ্ছিন্ন বাস শ্রমিক
হৃদয়ের এ্যাম্বুলেন্সেই রাহিমা মনি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। হৃদয়কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অর্থপেটিক বিভাগে ভর্তি করেন। রাতেই হৃদয়ের জ্ঞান ফিরে আসে।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার কাজীপাড়া গ্রামের রাহিমা মনি টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসের বাসে করে ঘটনার দিন মঙ্গলবার সকালে টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকা উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ওই গাড়িতেই বাস শ্রমিক হৃদয় একেবারে পেছনের ছিটে বসে ঢাকা যাচ্ছিলেন। তাদের বাসটি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেদগ্রামে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক বাসকে অতিক্রম করার সময় বাসের পেছনের অংশে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের পেছনের অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ সময় বাস শ্রমিক হৃদয়ের ডান হাত বাহু থেকে বিচ্ছন্ন হয়ে যায়।

রাহিমা মনি বলেন, ‘একই বাসে করে আমরা ঢাকা যাচ্ছিলাম। হৃদয়ের কোন স্বজন তার সঙ্গে ছিলেন না। তার বিপদে মানবিক কারণে আমি এগিয়ে আসি। ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় তাকে আমি একাই উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে এ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেটিক বিভাগে ভর্তি করি। সার্বক্ষণিক আমি তার সঙ্গে আছি। ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। রাতেই তার জ্ঞান ফিরেছে। চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। আশা করছি দ্রুত হৃদয় সুস্থ হয়ে উঠবে।’

হৃদয়ের বাবা রবিউল মিনা বলেন, ‘রাহিমা মনি মেয়ে হয়েও সাহসী ভূমিকা পালন করেছে। আমার ছেলের প্রাণ বাঁচাতে সে ত্রাণ কর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। প্রকৃপক্ষে সে মানবতাবাদী মানুষ। তাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর মত ভাষা আমার জানা নেই।’