২৪ ঘণ্টায় পানি থাকে মাত্র দুই ঘণ্টা!

0
২৪ ঘণ্টায় পানি থাকে মাত্র দুই ঘণ্টা

রাজধানীর দক্ষিণখানের কয়েকটি এলাকায় দিনে ওয়াসার পাইপলাইনে পানি থাকে না। লাইনে পানি আসে গভীর রাতে। তা-ও কেবল ২-১ ঘণ্টার জন্য। এ জন্য পানির জন্য রাত জেগে অপেক্ষা করতে হয় এলাকার বাসিন্দাদের।

২৪ ঘণ্টায় পানি থাকে মাত্র দুই ঘণ্টা

দক্ষিণখান ইউনিয়নের নদ্দাপাড়া, ইসলামবাগ, মধুবাগ, নামাপাড়া, সৈয়দনগর, সোনাখোলা, আইনুসবাগ, মিয়াপাড়া, টানপাড়া এলাকায় চলছে পানির এই সংকট। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গভীর রাতে যখন পানি আসে, তখন সংগ্রহ করে না রাখতে পারলে সারা দিন পানির সংকটে ভুগতে হয় তাঁদের। এ জন্য তাঁরা পানি সংগ্রহের জন্য রাত জেগে অপেক্ষা করেন।

টানপাড়ার বাসিন্দা পারভীন আক্তার বলেন, রাত দুইটার পর লাইনে পানি আসে। তখন কোনোমতে রান্নাবান্না ও খাবার পানি সংগ্রহ করে রাখেন তাঁরা। সারা দিন লাইনে পানি থাকে না। তিনি জানান, পুকুরের পানি দিয়ে তাঁদের অন্যান্য গৃহস্থালি কাজ সারতে হয়।

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পানি সংগ্রহের জন্য রাত জাগার কারণে অনেক কর্মজীবী নারী অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আইনুসবাগের বাসিন্দা শিউলী আক্তার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি বলেন, পানির জন্য প্রতিদিন তাঁকে রাত জেগে অপেক্ষা করতে হয়। তা ছাড়া দিনে কর্মস্থলে থাকার কারণে রাতেই তাঁকে ধোয়ামোছার কাজও করতে হয়। আবার সকালে ছুটতে হয় কর্মস্থলে। এতে তিনি ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। এ কারণে তিনি মাঝেমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

দিনে ওয়াসার সংযোগে পানি না থাকার প্রভাব পড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও।

হলান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদুর রউফ বলেন, স্কুলে রাতে কেউ থাকেন না। আর দিনে ওয়াসার সংযোগে পানি আসে না। এতে শৌচাগার ব্যবহারে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদ আবেদীন বলেন, ‘আমাদের সবাইকে দিনেই বেশি কাজ করতে হয়। অথচ তখন পানি থাকে না। সারা দিন পরিশ্রমের পর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটিয়ে রাতে পানির জন্য অপেক্ষা করতে হয়।’

পানিসংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়াসা মড্স জোন-৯ উত্তরার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রিয়াজ উদ্দীন বলেন, আশকোনার গভীর নলকূপটির উৎপাদনক্ষমতা কমে গেছে। উৎপাদনক্ষমতা প্রতি মিনিটে ২ হাজার ৫০০ লিটার থেকে এখন ১ হাজার ৪০০ লিটারে নেমে এসেছে।

আশকোনায় নতুন আরেকটি গভীর নলকূপ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে এই প্রকৌশলী বলেন, আগামী দেড় মাসের মধ্যে পাম্পটি চালু হওয়ার সম্ভাবনা আছে। গভীর নলকূপ চালু হলে পানির সমস্যা থাকবে না।

ওই এলাকায় আরেকটি গভীর নলকূপের দরকার আছে জানিয়ে মো. রিয়াজ উদ্দীন বলেন, নদ্দাপাড়া মোক্তারবাড়ি এলাকার কিছু জায়গা উঁচু এবং এর আশপাশে কোনো নলকূপ নেই। সেখানে ১টি পাম্প বসানোর জন্য জায়গা নিয়ে আলোচনা চলছে। তিনি জানান, দক্ষিণগাঁওয়ে একটি নতুন পানির পাম্প হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ-সংযোগের জন্য সেটি এখনো চালু হয়নি। পাম্পটি চালু হলে ওয়াসার লাইনে পানির চাপ বাড়বে। তখন সব এলাকায় এমনিতেই পানি পাওয়া যাবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে