৮০০কেজি বই বেচলেন প্রধান শিক্ষক

0
প্রধান শিক্ষক বই বেচলেন ৮০০কেজি

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে মাধ্যমিক শ্রেণির সরকারি ৮০০ কেজি বই কেজি দরে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

বইগুলো শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর দশরথ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের বলে খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক স্তরের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রণীত যষ্ঠ থেকে দশম শ্রেনীর বইগুলো ভাঙ্গারি হিসেবে শ্রীমঙ্গলের একজন ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করে দেন একই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ঝলক চক্রবর্তী।

ফেরিওয়ালা বইগুলো শ্রীমঙ্গল শহরের হবিগঞ্জ সড়কের চিত্রালী সিনেমা হল সংলগ্ন ইউসুফ আয়রন মার্ট নামে একটি ভাঙ্গারির দোকানে আরও বেশি দামে বিক্রি করে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে দোকানে গিয়ে শ্রমিকদের বইগুলো ওজন মাপার যন্ত্রে মেপে মেপে গুদামজাত করতে দেখা যায়।

বইগুলোর মধ্যে রয়েছে- মাধ্যমিক স্তরের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান, ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, গাহস্থ বিজ্ঞান, কৃষি শিক্ষা, পৌরনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের বোর্ড বই। বইগুলো পরীক্ষা করে দেখা গেছে এর মধ্যে ২০২০ শিক্ষা বর্ষের নতুন বই ও ২০১৯ শিক্ষা বর্ষের পুরাতন কিছু উইপোকায় নষ্ট হওয়া বই রয়েছে।

ইউসুফ আয়রন মার্টের মালিক মোঃ ইউসুফ গণমাধ্যমকে জানান, তিনি ফেরিওয়ালার কাছ থেকে ৮০০ কেজি বই ১২ টাকা দরে কিনেছেন।
বিদ্যালয়ে সুত্রে জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের প্রহরী রাম গোপাল দাশ এই বইগুলো ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করে। কিন্তু তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশেই বইগুলো বিক্রি করেছেন।

রামগোপাল দাশ গণমাধ্যমকে জানান, প্রধান শিক্ষক পুরাতন বইগুলো বিক্রয় করে কক্ষ পরিস্কার করার জন্য বলায় তিনি এসব বই ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করে দেন।

এ ব্যাপারে ভূনবীর দশরথ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ও মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ঝলক চক্রবর্তী জানান, স্কুলের দফতরিকে বলেছিলাম যে স্কুলের কিছু পুরাতন বই উইপোকায় কেটে ফেলেছে। সেসব নষ্ট বই ও কিছু ব্যবহৃত কাগজপত্র বিক্রি করে দিতে। দফতরি সেই বইগুলোর সঙ্গে ভুলক্রমে ২০২০ সালের বইগুলোও বিক্রি করে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীলিপ বর্ধন গণমাধ্যমকে জানান, কোনো বিদ্যালয় থেকে সরকারি বই এভাবে কেজি দরে বিক্রি করার নিয়ম নেই। যে বইগুলো অবন্টনকৃত থাকে সে বইগুলো উপজেলা মাধ্যমিক বই বিতরণ, গুদামজাতকরণ ও সংরক্ষণ কমিটির কাছে জমা দিতে হয়। পরে এগুলো দরপত্র আহ্বান করে বিক্রি করার নিয়ম আছে।

শ্রীমঙ্গলের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে সরকারি বই কেজি দরে বিক্রি করার কোনো নিয়ম নেই। কোনো স্কুলের প্রধান শিক্ষক এভাবে বই বিক্রি করতে পারেন না। তদন্ত সাপেক্ষে এই ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।