তুরাগ নদের তীরে আজ শুক্রবার আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। শেষ হবে ২১ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে। হজের পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ সমাবেশকে সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে সাত স্তরের নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো ইজতেমা ময়দান। দলে দলে দেশ-বিদেশ থেকে আসছেন মুসল্লিরা। আজ এ ইজতেমাস্থলে অনুষ্ঠিত হবে বৃহত্তম জুমার নামাজ।
সরেজমিন দেখা যায়, দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমাকে উদ্দেশ্য করে এরই মধ্যে ১৬ জেলার মুসল্লিরা ময়দানে সমবেত হয়েছেন। পুরো ইজতেমা ময়দান জনসমুদ্রে রূপ নিয়েছে।
খিত্তায় খিত্তায় চলছে রান্নাবান্না, তাসবিহ তাহলীল ও ধর্মীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা। ইজতেমার মুরুব্বিরা দলগতভাবে ভাগ হয়ে খিত্তায় খিত্তায় আলোচনা করছেন। এবারের ইজতেমায় দেশি মুসল্লির পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের বিদেশি মেহমানরা অংশ নিচ্ছেন।
ইজতেমায় আগত মুসল্লিরা জানান, পরকালের নাজাত ও জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে তারা ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেছেন। এখানে আল্লাহ, রাসূল (সা), পরকাল, জান্নাতের নেয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি নিয়ে ইজতেমার মুরব্বিরা আলোচনা করেন। দুনিয়ার মানুষ যাতে আল্লাহমুখী হয়ে যান এবং দুনিয়ায় মানুষের কাছে যেন ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া যায়, সে লক্ষ্যে শ্রম দেওয়াই ইজতেমার লক্ষ্য।
তবে যাত্রাপথে কিছুটা যানজট ও হিমেল হাওয়া তাদের জন্য কষ্টকর হলেও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এসব সমস্যাকে তারা সমস্যা মনে করছেন না। ইজতেমার ময়দানে ২৮ খিত্তায় জেলা অনুসারে অবস্থান নিয়েছেন মুসল্লিরা। ১৩টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে সুপেয় পানি। পয়ঃনিষ্কাশন ও অজু-গোসলের জন্য নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা।
ইজতেমা ময়দানের নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে সাত স্তরের নিরাপত্তাবলয়।
পোশাকে, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। এ ছাড়া আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পুলিশ সদস্যদের গতকাল তাদের স্ব স্ব দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে সংবাদ ব্রিফিংয়ে গাজীপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ বলেন, বিশ্ব ইজতেমায় দায়িত্ব পালনের জন্য সাত হাজার পুলিশ সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। অর্ধশতাধিক অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ইজতেমা ময়দান ও এর আশপাশের এলাকা মনিটরিং করা হচ্ছে। ইজতেমা ময়দানে যাতে মুসল্লিরা নির্বিঘ্নে আসতে পারেন সে জন্য যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। এর পাশাপাশি তুরাগ নদীতে নৌ পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।
ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন : ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের চিকিৎসাসেবায় হামদর্দ ও ইবনে সিনাসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে পক্ষ থেকে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
বৃহত্তম জুমার নামাজ : শুক্রবার দুপুরে ইজতেমা ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে বৃহত্তম জুমার নামাজ। নামাজে টঙ্গী ও আশপাশের এলাকার হাজার হাজার মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন। এ ছাড়া ইজতেমার মূল ময়দানে লাখো মুসল্লি জুমার জামাতে শরিক হবেন বলে আশা আয়োজকদের।