ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনায় ভাংচুর, আগুন দেয়া ও মালামাল চুরির অভিযোগে ৪জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলন চলার সময় একটা পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ভেতরে উপাচার্যের বাসভবনে গভীর রাতে ব্যাপক হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল। হামলাকারীরা সেসময় উপাচার্য ভবনের ব্যাপক ক্ষতি করে।
এ ঘটনার জন্য কারা দায়ী, তা নিয়ে সেসময় কয়েকদিন ধরেই তীব্র বাক-বিতণ্ডা দেখা গেছে আন্দোলনের পক্ষের ও বিপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে। তবে সে উত্তর মেলেনি । খবর বিবিসির। এইবার সে ঘটনায় গ্রেপ্তার হলো এক মাদ্রাসা ছাত্রসহ মোট ৪ জন।
হামলার ঘটনার পর ভিসির বাসার ভাংচুরের নানা ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে আসতে থাকে। সেখানে দেখা যায় বাড়ীর প্রবেশ মুখের কিছু দূরেই টেবিল চেয়ারে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। খাবারের টেবিল ভাংচুর, বেডরুম তছনছ করা হয়েছে। আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন কাগজপত্রেও।
ঘটনার রাতে অর্থাৎ গত ৯ই এপ্রিল একদল মুখোশধারী ঢুকে যখন এ হামলা চালায় তখন উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বাড়ির ভেতরেই ছিলেন। পরে তিনি বিবিসি বাংলাকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেন, তিনি নিজ চোখে হামলাকারীদের ঢুকতে দেখেছেন।
উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, তারা দেয়াল টপকে, সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙ্গে, বাতি নিভিয়ে দিয়ে যে বিভীষিকাময় পরিবেশ তৈরি করে, তার উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন।
এ ঘটনায় ১০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সিকিউরিটি অফিসার এস এম কামরুল আহসান অভিযোগ দায়ের করেন এবং তার প্রেক্ষিতে চারজনকে রোববার ঢাকার চানখারপুল এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তাদের কাছ থেকে ঘটনার সময় চুরি যাওয়া ২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, সে রাতে অজ্ঞাতনামা অনেক মুখোশধারী সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতিকারী হাতে লোহার রড, পাইপ, হেমার, লাঠি ইত্যাদি নিয়ে বৈআইনীভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সীমানা প্রাচীর টপকে এবং ভবনের মুল ফটকের তালা ভেঙ্গে ভবনের ভিতরে অনধিকার প্রবেশ করে ।
তারা বাসভবনের মূল্যবান জিনিসপত্র, আসবাবপত্র, ফ্রিজ, টিভি, লাইট, কমোড ও বেসিন সহ অনেক মালামাল ভাংচুর করে এবং মূল্যবান সম্পদ লুট করে । অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, হামলাকারীরা ভবনে রাখা ২টি গাড়ী পুড়িয়ে দেয় এবং আরও ২টি গাড়ী ভাংচুর করে। এছাড়াও ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ভেঙ্গে ফেলে এবং সিসি ক্যামেরার ডিভিআরগুলো আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করে ফেলে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া ৪ জনের মধ্যে কেউই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নয়। এদের একজন ঢাকা আলীয়া মাদ্রাসার ছাত্র এবং অপর ৩ জনের মধ্যে একজনের নামে বরিশাল ও লক্ষ্মীপুরে কয়েকটি মামলা রয়েছে । গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে রিমাণ্ড দিয়েছে আদালত ।