বর্তমানে পরিবেশ দূষণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্থান দ্বিতীয়তে

0
বর্তমানে পরিবেশ দূষণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্থান দ্বিতীয়তে

বিশ্বব্যাংকের জলবায়ুবিষয়ক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।বাংলাদেশে পরিবেশ সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।

পরিবেশ দূষণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বর্তমানে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থা। প্রথম স্থানে আছে ভারতের দিল্লি। আমাদের দেশে পরিবেশ দূষণের ফলে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। সাধারণত পরিবেশ দূষণ হল চার প্রকার। বায়ুদূষণ, পানিদূষণ, মাটিদূষণ ও শব্দদূষণ। পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ শিল্পায়ন।

শিল্প-কারখানায় জীবাশ্ম জ্বালানি যেমন তেল, গ্যাস, কয়লা ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের জন্য পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। কল-কারখানা ও ইটভাটা হতে বিষাক্ত গ্যাস নির্গমনের ফলে পরিবেশ দূষিত হয়। তাছাড়া যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা, মলমূত্র ত্যাগ ও হাসপাতালের বর্জ্য ফেলা পরিবেশ দূষণের উৎস। বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ পরিবেশে মিশলে পরিবেশ দূষিত হয়। অপরিকল্পিত এবং যথেচ্ছার জীবনযাপন, প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার, যানবাহন ও শিল্পাঞ্চল ইত্যাদির ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। অতিরিক্ত জনসংখ্যার জন্য অধিক বাসস্থান ও রাস্তাঘাট নির্মাণ করতে হচ্ছে। গাছপালা ও বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে।

খাদ্য-শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটছে এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। পরিবেশ দূষণের কারণে মানুষ ও জীবজন্তুর ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। মানুষ ক্যান্সার, চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ছে। সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের মতো নিুাঞ্চল ভবিষ্যতে পানিতে তলিয়ে যাবে।

পরিবেশ দূষণের হাত থেকে বাঁচতে হলে আমাদের সচেতন হতে হবে। শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন করতে হবে। বনায়নের পরিমাণ বাড়াতে হবে। নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। একটি দেশের আয়তনের শতকরা ৩০ ভাগ বনাঞ্চল থাকা প্রয়োজন। উদ্বেগের বিষয় হল, আমাদের দেশের বনাঞ্চলের পরিমাণ শতকরা ৭ ভাগ, যা ধীরে ধীরে কমছে।

অতএব পরিকল্পিতভাবে বনজ, ফলদ ও ভেষজ গাছ লাগাতে হবে। কল-কারখানা ও গৃহস্থালির বর্জ্য যেখানে-সেখানে ফেলে রাখা যাবে না। নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে হবে এবং রি-সাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ট্যানারির বর্জ্য যেন পরিবেশের ক্ষতি করতে না পারে, তার ব্যবস্থা করতে হবে।

চাষাবাদে অজৈব সার অর্থাৎ রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। উদ্ভিদ সংরক্ষণে কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে জৈবিক, যান্ত্রিক এবং চাষাবাদ পদ্ধতির পরিবর্তন ইত্যাদির মাধ্যমে বায়ু, পানি ও মাটি দূষণের হাত থেকে পরিবেশকে রক্ষা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।