শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ওয়াপদা লঞ্চঘাটে আজ সোমবার ভোর পাঁচটার দিকে পন্টুন বিচ্ছিন্ন হয়ে তিনটি লঞ্চ ডুবে গেছে। স্রোতের তোড়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) পন্টুন বিচ্ছিন্ন হয়ে লঞ্চগুলো ডুবে যায়। তিন লঞ্চে থাকা বেশ কয়েকজন কর্মী ও অনেক যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
লঞ্চ তিনটি হলো মৌচাক-৪, মহানগরী, নড়িয়া-১। মৌচাক-৪ লঞ্চটি ওয়াপদা লঞ্চঘাট থেকে ঢাকায় চলাচল করে। মহানগরী ও নড়িয়া-১ এই লঞ্চঘাট থেকে নারায়ণগঞ্জে চলাচল করে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চাঁদপুর ঘাটের উপপরিচালক মাহমুদুল হোসাইন জানান, বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী যান ‘প্রত্যয়’ নারায়ণগঞ্জ থেকে রওনা হয়েছে। মাওয়া ও ঢাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ডুবুরি দল রওনা হয়েছে।
এর আগে ওয়াপদা লঞ্চঘাটের ইজারাদার মোতাহার শিকারি জানান, ভোরের দিকে হঠাৎ করে ভাঙন ও স্রোতের টানে ঘাট থেকে পন্টুন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন পন্টুনের সঙ্গে পাঁচটি লঞ্চ নোঙর করা ছিল। তার মধ্যে তিনটি লঞ্চ স্রোতে ভেসে গিয়ে নদীতে ডুবে যেতে থাকে।
ঢাকা থেকে শরীয়তপুর গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন মোহাম্মদ আলী নামের এক যাত্রী। তাঁর গ্রামের নড়িয়া উপজেলার লোনসিং গ্রামে। মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী পারভীন (৩৫), শাশুড়ি ফখুননেসা (৫০) ও পাঁচ দিনের শিশুকন্যা। মৌচাক-৪ লঞ্চে ছিলেন তাঁরা। লঞ্চটি দুর্ঘটনার এক ঘণ্টা আগে পন্টুনে নোঙর করে। বাইরে অন্ধকার থাকায় লঞ্চের ভেতর অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। হঠাৎ লঞ্চ ডুবে গেলে তাঁরা পানিতে পড়ে যান। মোহাম্মদ আলী সাঁতরে পার হলেও তাঁর স্ত্রী, মেয়ে ও শাশুড়ি এখনো নিখোঁজ আছেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলামউদ্দীন জানান, শরীয়তপুরের নৌ–পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস নৌযানে করে নিখোঁজ যাত্রীদের সন্ধান করছে। লঞ্চগুলোর ভেতরে থাকা লোকজনের অবস্থান জানার চেষ্টা চলছে। নৌবাহিনীর ১১ সদস্যের একটি ডুবুরি দল খুলনা থেকে রওনা হয়েছে। প্রচণ্ড বৃষ্টি হওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা বিঘ্নিত হচ্ছে।